প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আবাস যোজনার (Pradhan Mantri Awas Yojana) টাকা সকল উপভোক্তাদের দেওয়া শুরু হবে চলতি বছর আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে। সেই সময় এই প্রকল্পের প্রথম দফার টাকা দেওয়া হবে। এমনটাই জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। তাই তো ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে আবাস যোজনার জন্য সমীক্ষা করে তালিকা চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে সমীক্ষার কাজ শুরু হতেই তালিকায় নাম তোলা নিয়ে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যার জেরে গত মঙ্গলবারই নবান্নে এই সংক্রান্ত বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেন যে, গ্রামাঞ্চলে আবাস যোজনার বাড়ি বিলিতে রাজ্যের দৃষ্টিভঙ্গি যেন মানবিক থাকে। গরিব মানুষ যেন কোনওভাবে এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়।
নাম বাদ পড়েছে ২০ শতাংশের!
ওইদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, প্রকৃত প্রাপকরাই যেন বাড়ি পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। কেউ যেন কেন্দ্রের দেওয়া শর্তের আইনি জালে আটকে না যায়। একটা স্কুটার থাকলেই বাড়ি তৈরির টাকা পাবে না, তা যেন না হয়। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরমুহুর্তেই নবান্ন সূত্রে জানা যায়, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তালিকা থেকে বহু নাম বাদ গিয়েছে। ১৬ লক্ষ লোকের তালিকা নিয়ে সমীক্ষা করতে নেমে ৩.৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে। অর্থাৎ প্রায় ২০ শতাংশ নামই বাদ চলে গিয়েছে। তাই ফের এই সব আবেদনকারীদের সমীক্ষার তালিকা পুনরায় যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন তাদের নাম বাদ পড়েছে তা কারণ দেখিয়ে স্পষ্ট জানাতে হবে জেলা প্রশাসনকে।
আবাস যোজনার নিয়ম আরও শিথিল সরকারের
কিন্তু প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, আবাস যোজনার তালিকা পুনরায় যাচাই করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে আবাসের উপভোক্তা তালিকায় এলাকাভিত্তিক ভাবে নাম বাদ যাওয়ার সংখ্যায় স্বাভাবিকের থেকে বেশি হেরফের হয়েছে। যার ফলে চিন্তায় মাথায় হাত পড়েছে জেলা প্রশাসনগুলি। এই অবস্থায় গ্রাম পঞ্চায়েতের দেওয়া উপভোক্তা-তথ্যও যাচাইয়ের নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। সঙ্গে নিয়মের বেশ পরিবর্তন করা হয়েছে। জেলাশাসকদের উদ্দেশে নবান্ন জানিয়েছে যাচাই পর্বে মূল উপভোক্তা অনুপস্থিত থাকলেও তা আটকাবে না। বরং সংশ্লিষ্টের পরিবারের বাকি সদস্যদের সই এবং ছবি নিয়ে যাচাই করাকে বৈধ বলেই ধরে নেওয়া হবে।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, উপভোক্তা তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া এবং অন্তর্ভুক্ত হওয়া নিয়ে যে অভিযোগ এবং অসন্তোষ প্রকাশ পাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে, তা মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ করতে চাইছে রাজ্য। শীঘ্রই এই বিষয় নিয়ে জেলায় জেলায় মন্ত্রী এবং সচিব পর্যায়ের নজরদারি প্রক্রিয়া শুরু হবে। সেখানে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতির খোঁজখবর নেওয়া হবে শীর্ষস্তর থেকে।