প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ধর্ষণ করে খুন করা হয় দ্বিতীয় বর্ষের এক তরুণী চিকিৎসককে। তারপর আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। অভূতপূর্ব নজিরবিহীন গণআন্দোলনের সাক্ষী হয় বাংলা। আমরণ অনশনে বসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। কিন্তু বিচার এখনও অধরা। প্রথমদিকে আন্দোলনের শুরুতে বিজেপি এগিয়ে এলেও পরে দেখা যায়নি তাঁদের। এদিকে কলকাতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এলেও দেখা করলেন না নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে।
রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে গত শনিবার গভীর রাতে কলকাতায় এসেছিলেন অমিত শাহ। সেখান থেকে পরের দিন সকালে তিনি চলে যান বনগাঁয় সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে। এরপর একের পর এক কর্মসূচিতে যোগদান করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের আনুষ্ঠানিক সূচনা অনুষ্ঠানে ছিলেন। সেই কর্মসূচি শেষ হতেই সোজা বিমানবন্দরে গিয়ে দিল্লি উড়ে যান। এর মধ্যেই কোনও একটা সময়ে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে বলে মনে করা হলেও শেষপর্যন্ত তা হয়নি।
নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন না অমিত!
জানা গিয়েছে তিলোত্তমা কাণ্ডের আবহে নির্যাতিতার বাবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে আগেই চিঠি লিখেছিলেন। কিন্তু আরজি কর-কাণ্ডের আবহে কলকাতায় এলেও, নিহত তরুণী চিকিৎসকের মা-বাবার সঙ্গে দেখা করলেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অমিত শাহ প্রায় ১৭ ঘণ্টা ধরে রাজ্যে থাকলেও সাক্ষাতের সময় না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করল নিহত চিকিৎসকের বাবা।
মেয়ের মৃত্যুর পর প্রথমেই কোর্টে সিবিআই তদন্ত দাবি করেছিলেন অভয়ার বাবা-মা। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের ফ্রন্ট সেই সময় সিবিআই তদন্ত দাবি করে। যদিও ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই সঞ্জয় রাই নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে মূল অভিযুক্ত বলে গ্রেপ্তার করেছিল কলকাতা পুলিশ। বস্তুত হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্ত হাতে নিয়ে সেই সঞ্জয়কেই একমাত্র অভিযুক্ত ও ধর্ষণকারী দেখিয়ে ৫৮ দিনের মাথায় চার্জশিটও জমা দিয়েছে সিবিআই।
কী বলছেন কুণাল ঘোষ?
কিন্তু ৩ মাসের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছলেও, এখনও সুপ্রিম কোর্টে রায় বেড়ালো না। আন্দোলনকারী ডাক্তারদের ফ্রন্ট এখন সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও নির্যাতিতার বাবা-মা সিবিআইয়ের প্রতি আস্থা জানিয়েছেন। আর এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূল-বিজেপি সেটিংয়ের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে সিপিএম। তবে অমিত শাহকে সরাসরি বাক্যের তীরে আক্রমণ করলেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজ্যে উন্নাও, হাথরসের মতো অজস্র গণধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। বিজেপি শাসিত মণিপুরে ধর্ষণের পর দুই তরুণীকে নগ্ন করে রাস্তায় হাঁটানো হয়েছে। কোথাও কোনও বিজেপি নেতা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেননি। তাই এখানে অভয়ার বাবা-মায়ের সঙ্গে যদি শাহ দেখা করেন, তবে এর পর বিজেপি শাসিত রাজ্যের সমস্ত নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেখা করতে যেতে হবে।”