শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ বাংলাদেশ (Bangladesh) নিয়ে বিতর্ক যেন থামতেই চাইছে না। যত সময় অতিবাহিত হচ্ছে ততই যেন একের পর এক সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছে ওপার বাংলা। অনেকেই বলতে শুরু করে দিয়েছেন যে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পরেও যেন শান্তি নেই কিছুতে। বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যাপক পরিমাণে বিদ্যুৎ সংকট দেখা গিয়েছে। রীতিমতো বাংলাদেশ যেন অন্ধাকারে ডুবে গিয়েছে। আর এর নেপথ্যে নাকি রয়েছে ভারত। সত্যিই কি তাই? ভারতের জন্য এখন অন্ধকারে তলিয়ে গিয়েছে ‘নতুন’ বাংলাদেশ? আরও বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির ওপর।
অন্ধকারে তলিয়ে গেল বাংলাদেশ!
আসলে জানা যাচ্ছে, বিদ্যুৎ সহ আরও অনেক বিষয়ে একপ্রকার গলা অবধি ঋণে ডুবে গিয়েছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের কাছে ঋণের পাহাড় জমে গিয়েছে বাংলাদেশের। আর সেই টাকা সময় মতো শোধ না করায় বেঁকে বসেছে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী আদানি গোষ্ঠী। প্রয়োজনের তুলনায় এখন অনেক কম বিদ্যুৎ নাকি বাংলাদেশকে সরবরাহ করছেন আদানি। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। তবে এসবের মাঝেই এবার বাংলাদেশকে ডেডলাইন বেঁধেও দেওয়া হয়েছে আদানি পাওয়ারের তরফে। বাংলাদেশের কাছে এখন ঋণ পরিশোধ করার জন্য আর মাত্র ৪ দিন সময় রয়েছে। অর্থাৎ আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ যদি টাকা পরিশোধ না করে তাহলে এর ফল ভুগতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ডেডলাইন বেঁধে দিল আদানি গ্রুপ
আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশকে বকেয়া পরিশোধ করতে বলেছে আদানি গ্রুপ। এটি করা না হলে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। এটা হলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিতে পারে। বর্তমানে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে অর্ধেক সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। অনেকেই হয়তো জানেন তো আবার অনেকেই হয়তো জানেন না যে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। যদিও এখন বাংলাদেশের কাছে আদানি পাওয়ারের পাওনা ৮৫ কোটি ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যা কিনা প্রায় ৭২০০ কোটি টাকা। এই পরিমাণ দাবি নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করলেও কোনো সুরাহা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার কথা বলেছে আদানি। এক রিপোর্ট অনুযায়ী, আদানি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) বকেয়া অর্থ পরিশোধ এবং পেমেন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৭ কোটি ডলারের একটি ঋণপত্র (এলসি) দিতে বলেছিল। এটি সরবরাহের সময়সীমা ছিল ৩১ অক্টোবর।
বিপদে বাংলাদেশ!
ইতিমধ্যে এলসি না পাওয়ায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক করে দিয়েছে আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেড। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশেও বিদ্যুতের সংকট দেখা দিয়েছে, যা এমনিতেই সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী। এরপরেই রয়েছে পায়রা (১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট), রামপাল (১ হাজার ২৩৪ মেগাওয়াট) ও এসএস পাওয়ার ১ হাজার ২২৪ মেগাওয়াট। এদিকে যদি বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ পাঠানো বন্ধ করলে প্রভাবিত হবে আদানিও। গোড্ডা প্লান্ট থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বাংলাদেশই এ কেন্দ্রের একমাত্র বিদ্যুৎ ক্রেতা। বাংলাদেশে অর্ধেক সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ডের ৮০০ মেগাওয়াট ইউনিটের একটি বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তার প্রভাব পড়বে আদানি গ্রুপের ওপরও।