শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ সকল অপেক্ষার অবসান, বাংলা নতুন করে আরো একটি বড় রকমের ব্রিজ পেতে চলেছে। ইতিমধ্যে হাওড়া ব্রিজ (Howrah Bridge) থেকে শুরু করে বিদ্যাসাগর সেতু বছরের পর বছর ধরে বাংলা ও হাওড়ার মানুষের গর্ব বাড়িয়ে চলেছে। তবে এখানেই শেষ নয় নতুন করে হুগলি নদীর উপর আরো একটি ব্রিজ তৈরি হতে চলেছে শেষমেষ। আর এর জন্য কয়েক বছরের জট কাটিয়ে জমি ও জোগাড় করতে সক্ষম হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন।
হুগলি নদীর বুকে আরও একটি ব্রিজ!
বছরে পর বছর ধরে ভারী ভারী ট্রাক বা গাড়ি ছুটে চলেছে। তারপরও যানজট থেকে শুরু করে দুর্ঘটনার ধারাবাহিকতা যেন শেষই হতে চাইছে না। এখানে অবশ্যই বিগত বেশ কিছু লম্বা সময় ধরে অন্যান্য নতুন একটি ব্রিজ তৈরি করারও প্রস্তাব বারবার সরকারের কাছে আসছিল। যদিও একের পর এক জমি-জটের কারণে সেই কাজ করে উঠতে পারছিল না সরকার। তবে অবশেষে জানা যাচ্ছে সেই বাধাও নাকি কাটিয়ে উঠতে পেরেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
অর্থাৎ আগামী দিনে হুগলি নদীর বুকে নতুন আরো একটি বড় ব্রিজ দেখার সৌভাগ্য লাভ করতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। যতদূর জানা যাচ্ছে, হুগলি নদীর উপরে তৃতীয় সেতুটি প্রস্তাবিত বারাণসী-কলকাতা এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে জোড়ার কথা। যদিও কেন্দ্রের তরফে কিংবা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে কোনওরকম চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। এই ছাড়পত্র চলে এলেই রাজ্য সরকারের কাজে আর কোনো রকম বাধা থাকবে না বলে খবর।
বারাণসী-কলকাতা এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সঙ্গে জুড়বে নতুন ব্রিজ?
সরকারি সূত্রে খবর, বারাণসী-কলকাতা এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সঙ্গেই হুগলি নদীর উপর দিয়ে তৃতীয় একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব জানিয়েছিল খোদ নবান্ন। প্রাথমিক ভাবে তা মেনে নিয়েছিলেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তবে সেখানে রাজ্য সরকারকে একটি শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
নিশ্চয়ই ভাবছেন কী শর্ত? শর্ত ছিল, জমির ব্যবস্থা করে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। সেই মতো দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জমির খোঁজ শুরু হয়। এই কাজে বেশ কিছু বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই জমির ব্যবস্থা হয়েছে। যে কারণে আগামী দিনে NHAI ছাড়পত্র দিলেই প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাবে বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি।
রুট কী হবে?
জানা গিয়েছে, প্রস্তাবিত সেতু-পরিকাঠামোটি হাওড়ার বাগনান থেকে শুরু হয়ে নদীর উপর দিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের কাছে শেষ হবে। সেখান থেকে একটি পথ জোকার দিকে চলে যাবে। অন্য পথটি ডায়মন্ড হারবারের দিকে এগিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। সেই মতো বিষ্ণুপুর এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রয়োজনীয় জমি চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে।
প্রকল্পের খরচ
বাংলায় যে একাধিক সড়ক প্রকল্পের কাজ হবে সেখানে কয়েকশো কোটি টাকার খরচ হবে বলে জানা গিয়েছে আর এসবটাই খরচ রাজ্য সরকার পাবে কেন্দ্রের তরফে। সূত্রের খবর, সড়ক পরিকাঠামো খাতে কেন্দ্রের থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার সুবিধা পেতে চলেছে রাজ্য। তাতে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বারাণসী-কলকাতা এক্সপ্রেসওয়ে থাকছে। প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ রক্সৌল-হলদিয়ার নতুন একটি এক্সপ্রেসওয়েও পাচ্ছে রাজ্য। তাতে ২০-২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করবে এনএইচএআই।
অন্যদিকে খড়গপুর-মোড়গ্রামের মধ্যে প্রায় ২৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আর একটি এক্সপ্রেসওয়েরও ছাড়পত্র মিলেছে। তাতেও কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে এলিভেটেড বা ঝুলন্ত সড়ক পরিকাঠামো তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাতে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে।