গঙ্গা পরিস্কারই কাজ, দিনে ২ কুইন্টাল প্ল্যাস্টিক বোতল কুড়িয়ে মাসে ১ লাখ আয় করেন কালীপদ

Published on:

plastic wages in ganges

শ্বেতা মিত্র, মুর্শিদাবাদঃ কালীপদ দাস… এমন একটা মানুষ যাকে নিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। কালীপদ দাস নিজেও কিন্তু একজন মানুষ। কিন্তু প্রতিদিন তিনি যা কাজ করেন সে কাজ সকলকে রীতিমত অবাক করে দিয়েছে। ‘নমামি গঙ্গে’ সম্পর্কে হয়তো কালীপদ দাস কোনওদিনই শোনেননি, কিন্তু প্রত্যেকদিন গঙ্গা পরিষ্কার করার দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। প্রতিদিন কুইন্টাল কুইন্টাল বর্জ্য তিনি নিজের হাতে পরিষ্কার করেন গঙ্গা থেকে। গঙ্গা যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, সেই কাজ করার দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আজ এই কালীপদ দাস সম্পর্কে আপনাদের সামনে এমন কিছু তথ্য দেওয়া হবে যেগুলি শুনলে হয়তো আপনিও আকাশ থেকে পড়বেন।

কে এই কালীপদ দাস?

WhatsApp Community Join Now

এই কালিপদ দাস আগে পেশায় একজন মৎস্যজীবী ছিলেন। কিন্তু সেটা বিগত কয়েক বছর আগে তিনি ছেড়ে দিয়েছেন। এখন তিনি নিজের উপার্জনের জন্য গঙ্গা থেকে বর্জ্য বিশেষ করে প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করেন। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গার কলাবেরিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি নিজের দিনই শুরু করেন এক ঘাট থেকে অন্য ঘাটে যাওয়ার মাধ্যমে। এরপর তার দিন শেষ হয় ভাগীরথী তীরে নয়তো ফরাসডাঙ্গা ঘাটে। তবে বর্জ্য সংগ্রহ করা নিয়ে তাঁর গর্বের শেষ নেই।

নিজের কাজ সম্পর্কে কালিপদবাবু জানান, ‘গঙ্গা থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করার কোনও সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা তদারকি করে না। নদীর বিভিন্ন ঘাট থেকে প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে আনি। আমি অন্য জেলেদের সঙ্গে নৌকা চালাতে শুরু করি এবং নৌকা চালাতে চালাতে ভাসমান প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে আনি। আমিও ঘাটে থেমে আশেপাশে পড়ে থাকা বোতল সংগ্রহ করি। দিনে ৫-৬ ঘন্টা কাজ করার সময় আমি ২ কুইন্টাল প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করি। এই প্লাস্টিকের বোতল রিসাইকেল করে বিক্রি করে ২৪০০-২৬০০ টাকা আয় করি। আমি শিক্ষিত নই, তবে লক্ষ্য করেছি যে শিক্ষিত লোকেরা প্লাস্টিক ব্যবহার করছে যা তারা নদীতে বা গঙ্গায় ফেলে দেয়।’

বাড়ছে দূষণ

এই প্রসঙ্গে হাইস্কুলের শিক্ষক সজল ভৌমিক বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ রোধে মানুষকে সচেতন করতে গেলে কালীপদ দাসকে সম্মানিত করতে হবে।’ আরও অনেকে জানান যে সমাজে কালীপদ দাসের মতো বহু মানুষকে জরুরি।

সঙ্গে থাকুন ➥
X