প্রীতি পোদ্দার: গত কয়েক দশকে, রাশিয়ায় (Russia) জন্মহার ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। যার ফলে দেশকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আসলে দেশে জন্মহার হ্রাস পাওয়ার পিছনে নানা কারণ অন্তর্নিহিত রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, আধুনিক জীবনের কর্মব্যস্ততা, ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ইত্যাদি।সব মিলিয়ে রাশিয়ার তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সন্তানের সংখ্যা বাড়ানোর প্রবণতা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমছে। তাই দেশের জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করতে নয়া উদ্যোগ নিতে চলেছে পুতিন সরকার।
আসলে এক্ষেত্রে যৌন মন্ত্রকের প্রধান উদ্দেশ্য হতে চলেছে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রজননের হার বাড়ানো এবং নারীদের সন্তানধারণে সহায়তা প্রদান করা। তাই সেই কারণে যৌনতা ও পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে সচেতনতা এবং সন্তানদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ ও মূল্যবোধ সম্পর্কে প্রচার চালানো শুরু করেছে সরকার। তবে এর পাশাপাশি যৌন মন্ত্রক প্রণয়নের পরিকল্পনা নিয়েও বড় পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। এবং কয়েকটি নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে।
সন্তান প্রসবের বিল পাশ নিম্নকক্ষে
শুধু তাই নয়, জন্মহার বৃদ্ধি করতে ইতিমধ্যেই রাশিয়ার খবারোভস্কে একাধিক নিয়ম চালু করা হয়েছে। সেই নিয়মের মধ্যে বলা হয়েছে ১৮ থেকে ২৩ বছর বয়সি মেয়ে, যাঁদের শিক্ষা এখনও সম্পূর্ণ হয়নি, তাঁরা যদি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে তাহলে প্রায় ১ লক্ষ টাকা পেতে পারেন। প্রথম সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে মিলবে প্রায় ৯ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা। রীতিমত ভ্লাদিমির পুতিন মহিলাদের তিনটি করে সন্তান ধারণের জন্য উৎসাহ জোগাচ্ছেন। এমনকি সন্তান না নেওয়ার ভাবনাকে পশ্চিমি সংস্কৃতির অংশ বলে দেশের সংসদের নিম্নকক্ষে বিল পাসও হয়ে গিয়েছে। বাকি শুধু উচ্চকক্ষের অনুমোদন। যদি সেটা হয়ে যায় তাহলে পুতিন সই করলেই সেটি আইনে পরিণত হবে।
যৌন মন্ত্রক প্রণয়নের পরিকল্পনাগুলি
- প্রেম করার জন্যও নাগরিকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। তাই সরকারের তরফ থেকে আলাপচারিতা এবং বোঝাপড়া তৈরি হওয়ার জন্য প্রথম তিনবার দেখা-সাক্ষাতের খরচ হিসেবেও টাকা দেওয়া হবে, প্রায় ৫০০০ টাকা করে।
- রাত ১০টা থেকে ২টো পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে ওই সময়ে পরস্পরের ঘনিষ্ঠ হতে পারেন যুগলরা।
- যে সকল মহিলারা বাচ্চা মানুষ করতে গিয়ে চাকরি করতে পারে না, তাঁদের বাড়ির কাজ এবং সন্তান পালনের জন্য টাকা দেওয়ার পাশাপাশি, পেনশনের ব্যবস্থাও করা হতে পারে।
- বিয়ের পর হোটেলে কয়েক রাত যাতে উপভোগ করতে পারেন নববিবাহিতরা, তার জন্য প্রায় ২৩ হাজার টাকা দেওয়ার ভাবনা রয়েছে সরকারের।
- সরকারের তরফ থেকে, যেখানে যৌনতা, ঋতুস্রাব সংক্রান্ত ফর্ম বিতরণও শুরু হয়েছে যেখানে সব তথ্য লিখতে হবে মহিলাদের। কেউ যদি উত্তর জানাতে না চান, তাহলে তাঁকে পাঠানো হবে চিকিৎসকের কাছে।
মহিলাদের যে যে প্রশ্নের উত্তর লিখতে বলা হচ্ছে ফর্মে, তা হল …
- ১) কোন বয়সে প্রথম যৌন সম্পর্কে জড়িত হয়েছেন?
- ২) নিরোধক ব্যবহার করেন কি না?
- ৩) আগে কখনও গর্ভধারণ করেছিলেন কি না, বন্ধ্যাত্ব রয়েছে কি?
- ৪) সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কি না?
- ৫) ঋতুচক্রের বিশদ তথ্য, শারীরিক সম্পর্কের সময় যন্ত্রণা হয় কি না, রক্তপাত হয় কি না। তবে এই ফর্ম পূরণে অনেক মহিলাই অনিচ্ছা প্রকাশ করছে বলে জানা গিয়েছে।