অনুদান দিচ্ছে না সরকার, মাধ্যমিক টেস্টের প্রশ্ন স্কুলভিত্তিক হবে কীভাবে? চিন্তায় শিক্ষকরা

Published on:

madhyamik pariksha

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। এরপরই শুরু হতে চলেছে চলতি বছরের মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষা (Madhyamik Test Exam)। আর তার পরেই শেষ হতে চলেছে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ। কারণ সামনেই মাধ্যমিকের টেস্ট। তাই জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। কারণ পরীক্ষা পরিচালনা থেকে শুরু করে প্রশ্নপত্র তৈরি সব কিছুর দায়িত্ব স্কুলগুলিরই। এমনই নির্দেশিকা দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আর এই নির্দেশ নিয়েই এবার খরচের প্রসঙ্গ তুলছে শিক্ষক শিক্ষিকারা।

কম্পোজিট গ্রান্ট নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

WhatsApp Community Join Now

এদিকে দৈনন্দিন খরচ চালানোর জন্য প্রতি বছরের শুরুতে সরকারী স্কুলগুলিকে কম্পোজিট গ্রান্ট বাবদ টাকা দেওয়া হয়ে থাকে। যার মধ্যে রাজ্য দেয় ৬০ শতাংশ এবং কেন্দ্র ৪০ শতাংশ অর্থ দেয়। প্রতিটি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে স্কুলগুলিকে এই টাকা দেওয়া হয়ে থাকে। জানা গিয়েছে কোনো স্কুলে যদি এক হাজারেরও বেশি পড়ুয়া থাকে তাহলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলির বছরে এক লক্ষ টাকা পাবে। কিন্তু পড়ুয়ার সংখ্যা যদি ১০০০ এর কম হয় এবং ২৫০-এর বেশি হয় তাহলে ৭৫ হাজার টাকা পাওয়া যাবে কম্পোজিট গ্রান্ট বাবদ। এ ছাড়াও সংখ্যা অনুযায়ী ৫০ ও ২৫ হাজার টাকাও পাওয়া যায়। তবে, বেশির ভাগ স্কুল এই নির্ধারিত টাকা পায় না বলে অভিযোগ করছে। আর এই আবহেই প্রশ্ন উঠছে যে স্কুলগুলি মাধ্যমিকের টেস্টের জন্য খরচ কোন খাত থেকে করবে।

প্রধান শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, সরকারি অনুদান না আসায় স্কুলের চক-ডাস্টার কেনার খরচ, বিদ্যুৎ বিল, সামিটিভ পরীক্ষা পরিচালনার খরচ পর্যন্ত কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। সঙ্গে টুকটাক খরচ তো রয়েছেই। তার উপর স্কুলগুলিতে মাধ্যমিক পরীক্ষার টেস্টের খরচ কোথা থেকে যে মিলবে তাই নিয়ে বেশ চিন্তায় সকলে। তাই তাঁদের একাংশের দাবি বিজ্ঞপ্তি বা নির্দেশ দেওয়ার আগে স্কুলগুলির আর্থিক সচ্ছলতা-সহ কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। না হলে পর্ষদের নির্দেশ মানতে গিয়ে প্রবল আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি।

সিলেবাস ও নিয়মাবলী মেনে প্রশ্ন করার নির্দেশ পর্ষদের

অন্যদিকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলগুলিকে বলা হয়েছে সিলেবাস ও নিয়মাবলী মেনে প্রশ্ন করলেই শুধু হবে না, দেখতে হবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকই যেন প্রশ্নপত্র তৈরি করে। যদি পর্ষদের নির্দেশ লঙ্ঘন হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধানশিক্ষককেই দায়ী করা হবে বলে স্পষ্ট জানানো হয়েছে। আর এই প্রসঙ্গেই রাজ্যের প্রধানশিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “পরীক্ষার দায়িত্বে যখন স্কুলগুলিই, তখন কী ভাবে প্রশ্ন করা হবে তা পর্ষদ ঠিক করে দিতে পারে না।”

পাশাপাশি ক্লাস্টার মডেল ভিত্তিক প্রশ্নপত্র নিয়েও উঠছে বিতর্ক। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে প্রতিটি স্কুলকে আলাদা করে প্রশ্নপত্র সাজাতে হবে। আর সেই বিষয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানান, ‘‘পর্ষদ ক্লাস্টারের বিরোধিতা করছে কেন বোঝা যাচ্ছে না। সরকার এখন‌ও কম্পোজিট গ্রান্ট-এর টাকা দেয়নি। স্কুলগুলির আর্থিক অবস্থা করুণ। এই অবস্থায় প্রতিটি স্কুলকে আলাদা করে প্রশ্নপত্র ছাপাতে গেলে তাদের উপর আর্থিক চাপ পড়বে। আবার পড়ুয়াদের থেকে বেশি ফি-ও নেওয়া যাবে না। তবে, স্কুলগুলি চলবে কী করে?’’ সেই বিষয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি নবান্নের তরফ থেকে।

সঙ্গে থাকুন ➥
X