শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ ফের একবার শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় রকমের পরিবর্তন আসতে চলেছে। বিশেষ করে যেসকল পড়ুয়া সিবিএসই (Central Board of Secondary Education) বোর্ডের তাদের আগামী বছর থেকে এক নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিতে পারে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই ‘ওপেন বুক এক্সাম’ পরিচালিত করবে। পরীক্ষায় একগুচ্ছ পরিবর্তন থেকে শুরু করে সিলেবাসও কমবে বলে জানা গিয়েছে। ওপেন বুক এক্সাম মানে হল বই খুলে পরীক্ষা দেওয়া। আর এই পদ্ধতি আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে লাগু হবে বলে খবর।
এবার বই খুলে পরীক্ষা দেবে পড়ুয়ারা
২০২৫-২৬ সাল থেকে দশম ও দ্বাদশের পরীক্ষায় বড়সড় পরিবর্তনের কথা জানিয়ে দিয়েছে CBSE। বোর্ডের শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীতে কিছু সাবজেক্ট বই খুলে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। যার মধ্যে রয়েছে ইংরেজি, সোশ্যাল সাইন্স ইত্যাদি। পাশাপাশি বোর্ড চাইছে না যে পড়ুয়ারা মুখস্থ বিদ্যার ভিত্তিতে পাস করুক। যে কারণে সিলেবাস থেকে সরাসরি প্রশ্নের বদলে উপস্থিত বুদ্ধির প্রয়োগ খাটিয়া উত্তর দিতে হবে এমন ৫০ শতাংশ বেশি প্রশ্ন থাকবে প্রশ্নপত্রে। এছাড়া বোর্ডের ফাইনাল পরীক্ষাও দুভাগে ভাগ হবে বলে জানান বোর্ডের ওই কর্মকর্তা।
এখন ৪০% অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন গ্রেড তৈরি করবে
বোর্ড অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের গুরুত্ব বাড়িয়েছে, যার অধীনে এখন ৪০% গ্রেড অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন থেকে আসবে এবং ৬০% গ্রেড চূড়ান্ত বোর্ড পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে আসবে। অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে সময়ে সময়ে নেওয়া প্রকল্প, অ্যাসাইনমেন্ট এবং পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এটি শিক্ষার্থীদের তাদের পড়াশোনায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং তাদের বোঝার আরও ভালভাবে প্রদর্শন করতে সক্ষম করবে।
ব্যবহারিক জ্ঞানের উপর আরও জোর দেওয়া
জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি) ২০২০ অনুসারে, সিবিএসই এখন পরীক্ষার ধরণও পরিবর্তন করছে। ২০২৫ সালের বোর্ড পরীক্ষায় প্রায় ৫০% প্রশ্ন থাকবে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক তথ্য ও দক্ষতা যাচাই করার জন্য। অর্থাৎ, প্রশ্নগুলো এখন আর শুধু তত্ত্বের ওপর থাকবে না, থাকবে দৈনন্দিন জীবনে জ্ঞানের ব্যবহার নিয়ে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়িয়ে তুলবে এবং তারা মুখস্থ শেখার পরিবর্তে গভীরভাবে বুঝতে সক্ষম হবে।
CBSE বোর্ড পরীক্ষা ২০২৫- এর জন্য মূল পরিবর্তনগুলি কী কী?
১৫% সিলেবাস হ্রাস: সিলেবাস ১৫% কমানো হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের উপর পড়াশোনার বোঝা কমিয়ে দিয়েছে।
৪০% অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন: মোট গ্রেডের ৪০% এখন প্রকল্প, অ্যাসাইনমেন্ট এবং পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।
ব্যবহারিক ভিত্তিক প্রশ্নঃ প্রায় ৫০% প্রশ্ন হবে ব্যবহারিক জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের জ্ঞান বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারে।
ডিজিটাল অ্যাসেসমেন্ট: অধিকতর নির্ভুলতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কিছু বিষয়ে ডিজিটাল অ্যাসেসমেন্ট অব্যাহত থাকবে।
ওপেন বুক পরীক্ষা: ইংরেজি সাহিত্য ও সমাজবিজ্ঞানের মতো বিষয়ের জন্য ওপেন বুক পরীক্ষার ফরম্যাট শুরু হবে।