প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: প্রায় ২ বছর আগে শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এর দুটি ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়। এমনকি অভিযোগের আঙুল ওঠে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর দিকে। যার জেরে এখনও জেলবন্দী পার্থ এবং অর্পিতা। আর এই কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের রেশ কাটতে না কাটতেই লটারি ব্যাবসার আড়ালে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠে এসেছে। যার জেরে ফের খাস কলকাতায় সকাল সকাল তদন্ত করতে নেমে পড়ল ED।
উদ্ধার হল কোটি কোটি টাকা!
সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ শুক্রবার সকাল থেকেই দক্ষিণ কলকাতার লেক মার্কেট এবং আরও একটি জায়গায় চিরুনি তল্লাশি অভিযান জারি রেখেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ED। বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে তাঁদের দল। ED সূত্রের খবর, লেক মার্কেটের প্রিন্স গোলাম মহম্মদ রোডের একটি বহুতল আবাসনে এক ব্যক্তির ফ্ল্যাট থেকে কয়েক কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এত কোটি কোটি টাকা গোনার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে নিয়ে আসা হয়েছে টাকা গোনার যন্ত্রও। সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে লটারির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা হয়েছে। আর এই প্রতারণার ঘটনায় প্রভাবশালী যোগেরও তত্ত্ব উঠে এসেছে।
দেশের ২০টি জায়গায় তল্লাশি চালায় ED!
এদিকে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, সকালে কলকাতা শহর এবং শহরতলির একাধিক জায়গায়ও হানা দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকেরা। একই সঙ্গে এয়ারপোর্ট লাগোয়া মাইকেল নগরে একটি প্রিন্টিং ফ্যাক্টরিতেও হানা দিয়েছে ইডির আধিকারিকরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার লেক মার্কেট এলাকায় কবি ভারতী সরণীর একটি ফ্ল্যাটেও হানা দেয় ইডি। সব মিলিয়ে দেশের ২০টি জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। কলকাতা সহ ফরিদাবাদ, লুধিয়ানা, চেন্নাই এবং কোয়েম্বাটুরে হানা দেয় আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
পূর্বে লটারি কর্তা সান্টিয়াগো মার্টিনের বিরুদ্ধে সংবাদ মাধ্যমে একাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। জানা গিয়েছে, মার্টিন ১৯৯১ সালে ফিউচার গেমিং সংস্থা এবং হোটেল পরিষেবার সূচনা করেন। যারা পাঁচ বছর আগে ইলেক্টোরাল বন্ডে ১৩৬৮ কোটি টাকা রাজনৈতিক দলকে অনুদান হিসেবে দিয়েছিল। এই সংস্থার বিরুদ্ধে ২০১৯ সাল থেকে তদন্ত চালাচ্ছে ED। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের অক্টোবরে লটারির বেআইনি টাকার যোগসূত্র খুঁজতে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে একটি লটারি সংস্থার ছাপাখানা এবং গুদামে তল্লাশি অভিযান চালান আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। অভিযোগ উঠেছিল যে প্রকৃত পুরস্কার প্রাপকদের বঞ্চিত করে ওই সংস্থা পুরস্কারের কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করেছে।