প্রীতি পোদ্দার: সমাজ যত উন্নতির দিকে পা বাড়াচ্ছে, ততই যেন পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাবের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। বায়ুদূষণ থেকে শুরু করে শব্দ দূষণ এতটাই প্রভাব বাড়ছে যে মানুষের শরীরে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে। নানা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কোনো দিক থেকে লাভ হচ্ছে না। তাই এবার পরিবেশ দূষণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক বড় সিদ্ধান্তে উপনীত হল সরকার।
কী পদক্ষেপ নিল সরকার?
জানা গিয়েছে, পরের বছর অর্থাৎ ২০২৫ সাল থেকে বাংলাদেশের সকল সরকারি নির্মাণকাজে পোড়ানো ইটের ব্যবহার বন্ধ করা হবে। এমনই নির্দেশনা প্রকাশ করতে চলেছেন বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, “সরকারই ইটের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। রাস্তাঘাট ও ভবন নির্মাণসহ বড় বড় প্রকল্পে ইট ব্যবহার করা হয়। তবে পোড়ানো ইটের বিকল্প ব্যবহারের জন্য সরকারের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া উচিত। সরকার এ বিষয়ে চাহিদাপত্র দিলেই সমাধান সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হল ইটভাটা অঞ্চল। তাই এটি বন্ধের বিষয়ে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। এখন থেকে দেশে আর নতুন ইটভাটার ছাড়পত্র দেওয়া হবে না। আর যাদের ছাড়পত্র নেই তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।অর্থাৎ ৩৪৯১টি ইটভাটার ছাড়পত্র বাতিলের পথে হাঁটতে চলেছে সরকার। এছাড়াও, জেলাগুলোতে যে সকল ইটভাটা গুলি অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলিকে জনস্বার্থে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে ব্লক ইট তৈরির কাজে প্রয়োজনে প্রণোদনা দেবে সরকার।”
ভেঙে দেওয়া হবে পুরো ইটভাটা
জিগজ্যাগ ইটভাটার বিষয়ে উপদেষ্টা এদিন বলেন, “বর্তমানে জিগজ্যাগ ইটভাটায় কোনো অভিযান চালানো হচ্ছে না, কারণ অনেকেই সেখানে বিনিয়োগ করেছেন। তবে এসব ইটভাটার মালিকদের সতর্ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি নিয়ম-নীতি মেনে উৎপাদনের বিষয়টি তদারকি করবে। যদি কোনো অনিয়ম ধরা পড়ে, তাহলে পুরো ইটভাটা ভেঙে দেওয়া হবে।” আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন সরকারের এই উদ্যোগ এবার হয়তো পরিবেশ দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে।
পলিথিনের ব্যবহার প্রসঙ্গে কী বললেন তিনি?
অন্যদিকে পরিবেশ দূষণে পলিথিনের ব্যবহার প্রসঙ্গে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “গত ৩ নভেম্বর থেকে নিষিদ্ধ পলিথিন বা পলিপ্রপাইলিন শপিং ব্যাগের বিরুদ্ধে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমলে পলিথিন ব্যবহার বন্ধেও নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এবং নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে ৩ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে পলিথিন উৎপাদন, বিক্রি, সরবরাহ ও বাজারজাত করার দায়ে ১২৪টি মোবাইল কোড অভিযান পরিচালনা করে ২৬৮টি প্রতিষ্ঠানকে ১২ লাখ ৫২ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় এবং ২৬ হাজার ৮৭১ দশমিক ছয় কেজি পলিথিন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।”