প্রীতি পোদ্দার: প্রতিদিন কলকাতা শহর শহর বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে বিভিন্ন আবর্জনার চাপ। ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র থেকে শুরু করে আরও অনেক কিছু। আর প্রতিদিন এই আবর্জনার পাহাড়ে রীতিমত বায়ুদূষণ, দৃশ্যদূষণ হয়েই চলেছে। যার ফলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে শহরবাসীকে। তার মধ্যে অন্যতম হল পুরাতন মালদা পুরসভা (Old Malda Municipality)। তবে সম্প্রতি জানা গিয়েছে পুরাতন মালদা পুরসভা বাড়ি থেকে জঞ্জাল সংগ্রহের জন্য কর বসাবে ৷ আগামী ডিসেম্বর থেকে সেই কর নেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন খোদ পুরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ ৷
ঘটনাটি কী?
আসলে মালদা জেলায় দুটি পুরসভা, ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদা৷ কোনও পুরসভারই নিজস্ব ডাম্পিং গ্রাউন্ড নেই ৷ তাই আবর্জনা ফেলতে হয় কখনও জাতীয় সড়কের ধারে, কখনও খোলা মাঠে পুরসভার কর্মীরা ফেলে দেয়৷ দুই পুরসভা মিলিয়ে প্রতিদিন অন্তত ২৫ ট্র্যাক্টর আবর্জনা ফেলা হয়৷ আর এর ফলে বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনা ফেলা নিয়ে একাধিকবার মানুষের সঙ্গে পুরকর্মীদের ঝামেলাও বেঁধে যায়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল পর্যায়ে পৌঁছয় যে দুই পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ড ভোটের ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ কিন্তু একাধিক নির্বাচন পেরিয়ে গেলেও সমস্যার এখনও সুরাহা হয়নি৷ এই পরিস্থিতিতে এবার আবর্জনা কর চালুর উদ্যোগ নিল ইংরেজবাজার পুর কর্তৃপক্ষ ৷
আবর্জনার উপর কর বসানোর প্রসঙ্গে পুরাতন মালদহ পুরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ জানিয়েছেন, ”আগামী মাস থেকে অর্থাৎ ১ ডিসেম্বর থেকে এই কর চালু করছি আমরা। দৈনিক এক টাকা করে কর ধার্য করা হবে। আসলে শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের তরফ থেকে। তাই আমরা এমন পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
প্রতি মাসে ৩০ টাকা করে দিতে হবে ‘কর’!
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ির আবর্জনা এবং জঞ্জাল পরিষ্কারের জন্য দৈনিক এক টাকা করে এই কর ধার্য করা হলে মাসে ৩০ টাকা করে এই কর দিতে হবে শহরের বাসিন্দাদের। পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের নির্দেশেই এই সার্ভিস ট্যাক্স চালু করার পরিকল্পনা নিতে চলেছে পুরাতন মালদহ পুরসভা। এর আগেও এমন উদ্যোগ নিয়েছিল পুরসভা। সেই সময় চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, পরিষেবা অব্যাহত রাখতে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধে পেতে এই কর চালু করতেই হবে ৷
কিন্তু প্রথমে শহরের সাধারণ মানুষ, জেলার বণিকসভা এবং পুরসভার বেশ কয়েকজন আধিকারিক এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে ৷ এমনকি মালদা শহরের বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী সমিতি পুরসভায় চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়, তারা এই কর দেবে না ৷ বাধ্য হয়ে পিছিয়ে আসতে হয় পুর কর্তৃপক্ষকে৷ পড়ে ফের সমস্ত বাঁধা কাটিয়ে এবার সেই একই পথে হাঁটতে চলেছে মালদা পুরসভা৷