শ্বেতা মিত্র, পূর্ব মেদিনীপুরঃ ফাঁকা মন্দারমণি (Mandarmani)। পরপর তিন দিনের ছুটি, তারপরেও মন্দারমণি থেকেও উধাও পর্যটকদের চেনা ভিড়। কারণ, হোটেল, লজ, রিসর্ট, হোমস্টে সমেত ভাঙা পড়তে পারে ১৪০ নির্মাণ।
চেনা ভিড় নেই মন্দারমণিতে
শনিবার, রবিবারের আগে গুরুনানকের জন্মতিথি উপলক্ষ্যে শুক্রবারেও ছুটি। পরপর তিন দিন ছুটি পেয়ে অনেকেই কাছেপিঠে ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন। সময়ের সঙ্গে মন্দারমণি পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছে। অবসর যাপনের জন্য দিঘার পাশাপাশি সাধারণ মানুষ মন্দারমণিকে বেছে নিতেও দ্বিধা করেন না। কিন্তু প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের পর পর্যটকদের সেই ভিড় কার্যত উধাও। যার ফলে মাথায় হাত পড়েছে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত প্রায় দশ হাজার মানুষের।
ভেঙে ফেলা হবে ১৪০টি নির্মাণ!
মন্দারমণি সহ আশেপাশের একাধিক এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক বেআইনি নির্মাণ। জাতীয় পরিবেশ আদালত ১৪০টি নির্মাণ ভেঙে ফেলে জায়গা ফাঁকা করার নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি। আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশ জারি হওয়ার পর থেকে মন্দারমণিতে কমেছে পর্যটকদের ভিড়, কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে হোটেল মালিক, স্থানীয় দোকানদার সহ পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় সকলের।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৪০টি নির্মাণের মধ্যে দাদনপাত্রবাড়ে রয়েছে ৫০টি হোটেল, সোনামুইয়ে রয়েছে ৩৬টি হোটেল, সিলামপুরে রয়েছে ২৭টি ও মন্দারমণিতে রয়েছে ৩০ হোটেল। এছাড়া দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরে একটি লজ ভেঙে ফেলা হতে পারে। পরিবেশ আদালত ২০২২ সালে এই বেআইনি হোটেলগুলো ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল বলে খবরে প্রকাশ।
বড় চমক প্রশাসনের
এমনিতে উৎসবের মরশুমে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। হোটেল, লজগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তার ওপর আবার হোটেল ভাঙার নির্দেশ। অনেকের ধারণা, ঝক্কি এড়াতে আপাতত মন্দারমণির দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছেন পর্যটকরা। হোটেল, লজ ইত্যাদি ভাঙা পড়লে কীভাবে রুটিরুজি জোগাড় করা সম্ভব হবে, সেটা ভাবতে গিয়ে অনেকেই কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না। এমনও অনেক মানুষ রয়েছেন যারা আগে পেশায় ছিলেন মাঝি, এখন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরাও বুঝতে পারছেন না যে পর্যটক না এলে সংসার চালাবেন কী করে।