শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু আচমকাই ভারতীয় রেলের কাছে মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াল বন্দে ভারত স্লিপার (Sleeper Vande Bharat) ট্রেন। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। এমনিতে দেশের বহু রাজ্যে ছুটে চলেছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন। তবে এবার বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনের জন্য অধীর আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছেন দেশবাসী। এই ট্রেনের মাধ্যমে শুয়ে শুয়ে এবং সবথেকে বড় কথা, আরামদায়কভাবে যাত্রীরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা চলে যেতে পারবেন। তবে আচমকা রেলের এই স্বপ্নের প্রকল্পে ব্রেক লাগল। অর্থাৎ এখনও বেশ কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে এই ট্রেনকে ছুটতে দেখতে।
বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেন নিয়ে খারাপ খবর!
বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনগুলির উৎপাদন আটকে গেছে। এর কারণ ইন্দো-রাশিয়ান কনসোর্টিয়াম এবং ভারতীয় রেলওয়ের মধ্যে যৌথ উদ্যোগ (জেভি) চুক্তি স্বাক্ষরের ১৪ মাস পরেও নকশা চূড়ান্ত করা হয়নি। এই যৌথ উদ্যোগের নেতৃত্বে রয়েছে রাশিয়ান কোম্পানি টিএমএইচ। একই সংস্থা ১৯২০ বন্দে ভারত স্লিপার কোচ তৈরি করবে। টিএমএইচ বলেছে যে ভারতীয় রেল ক্রমাগত নকশা পরিবর্তন করছে, যে কারণে চূড়ান্ত নকশা আসতে দেরি হচ্ছে।
এই পরিবর্তনগুলির মধ্যে প্রতিটি কোচে অতিরিক্ত টয়লেট, লাগেজ স্পেস এবং একটি প্যান্ট্রি কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যার কারণে ডিজাইনিং এর প্রক্রিয়া জটিল ও দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে টিএমএইচের সিইও কিরিল লিপা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব এবং প্রকল্পের সময়রেখা ক্রমাগত এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। লিপা জানিয়েছেন, ‘ভারতীয় রেল যদি এই প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে দেয়, তাহলে উৎপাদনের সময়সীমা অবশ্যই প্রভাবিত হবে। আমরা উৎপাদন শুরু করতে আগ্রহী, তবে আমরা চিঠি এবং ব্যাখ্যা পাঠানোর জন্য কয়েক মাস ধরে অপেক্ষা করছি।’
৫৫ হাজার কোটির চুক্তি এখন প্রশ্নের মুখে!
দুই দেশের মধ্যে চুক্তির পরিমাণ প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। টিএমএইচ এবং রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল) এর মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ভারতের রেলওয়ে নেটওয়ার্কের পরিবর্তে দ্রুতগামী ও আধুনিক ট্রেন চালানোর উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই চুক্তি করা হয়েছে। এই আধুনিকীকরণে বন্দে ভারত স্লিপার কোচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। লিপা আরও বলেন, গত সপ্তাহে দিল্লিতে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিষয়ক ভারত-রাশিয়া আন্তঃসরকারি কমিশনের বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়, যেখানে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে ভারত সরকার নকশা সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবে, যাতে এই প্রকল্পে আরও কাজ করা যায়।