প্রীতি পোদ্দার, শিলিগুড়ি: জীবনে কিছু অ্যাডভেঞ্চারাস করার ইচ্ছা জাগলেও প্রথমেই মাথায় আসে ট্রেকিং। বন্ধু বান্ধব পরিবারের সঙ্গে বরফের মধ্যে ট্রেকিং করার মজাই আলাদা। কিন্তু এই মজার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ঘোর বিপদ। গত কয়েক বছরে সান্দাকফু (Sandakphu) ট্রেকে গিয়ে একাধিক অভিযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। প্রায় সবাই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। শতবার মেডিক্যাল টেস্ট করার কথা বললেও অনেকেই গ্রাহ্য করছে না। এবার তাই এবিষয়ে বড় পদক্ষেপ নিল প্রশাসন।
ট্রেকিং নিয়ে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের
সূত্রের খবর, সান্দাকফু ঘোরা বা ‘ট্রেক’ করার জন্য ‘মেডিক্যাল সার্টিফিকেট’ বাধ্যতামূলক করতে চলেছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের অনুমোদনের পরে জেলা প্রশাসন এবং জিটিএ যৌথ ভাবে সান্দাকফুর জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করবে। কয়েক দিনের মধ্যেই জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল সেটি ঘোষণা করবেন বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি। সেই নির্দেশিকায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মাবলীর পাশাপাশি সান্দাকফুর মতো উচ্চতায় কী করণীয় এবং কী করার নয়, সেই বিষয়গুলি পুঙ্খানুপুঙ্খ লেখা থাকবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মানেভঞ্জন থেকে পাওয়া যাবে অনুমতিপত্র। তবে অনলাইনেও আগাম অনুমতিপত্র তৈরির ব্যবস্থা হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। সব ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু কোনো কারণে যদি মনে হয় যে কোনও ব্যক্তির সুস্থতা নিয়ে প্রশাসনের আধিকারিকদের মনে প্রশ্ন উঠছে তাহলে তাঁকে সরাসরি স্থানীয় হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে কতদিনের পুরনো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট বৈধ তা এখনও জানা যায়নি।
কী বলছেন চিকিৎসকরা?
চিকিৎসকদের তরফে জানা গিয়েছে পাহাড়ের এমন উচ্চতায় উঠে অনেকের শারীরিক সমস্যা হয়। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিস জাতীয় রোগ থাকলে সান্দাকফুর মতো উচ্চতায় নানা সমস্যার সম্ভাবনা থাকে। তাই সেখানে গিয়েই ট্রেকিং করার ঝুঁকি না নিয়েই ধাপে ধাপে এক-দু’দিন ধারে-আশেপাশে থেকে শরীরকে মানিয়ে নিয়ে এগনোই শ্রেষ্ঠ। অন্যদিকে পর্যটন সংস্থাগুলির সংগঠন ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, “অ্যাডভেঞ্চার-পর্যটনের জন্য কড়া নিয়ম প্রয়োজনীয়। সান্দাকফু অঞ্চলে তা দ্রুত বলবৎ হওয়া জরুরি।”