প্রীতি পোদ্দার, নয়াদিল্লি: বাংলাদেশে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর হিন্দুদের ওপর নানা অত্যাচারের ঘটনা বার বার উঠে এসেছে। আর তার বিরোধিতা করতে পথে নেমেছে সেখানকার গোটা হিন্দু জাতি। যোগ দিয়েছে ইসকনও। গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুও। সেই সমাবেশেই নাকি তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন। এই অভিযোগেই চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান।
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস
গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেই নেতা। কিন্তু পরে ফিরোজকে BNP থেকে বহিষ্কার করা হলেও সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গতকাল অর্থাৎ সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। মানসিক এবং শারীরিক ভাবে হেনস্থা করার অভিযোগও উঠেছে ঢাকা পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে ক্ষোভ তুলে ভারত সরকারের কাছে সাহায্য চেয়েছিল ইসকন। আর এবার সেই সাহায্যেই হাত বাড়াল নয়া দিল্লি।
গ্রেফতারিতে ক্ষোভ প্রকাশ করল বিদেশমন্ত্রক
চিন্ময় দাসের এইরূপ গ্রেফতারি প্রসঙ্গে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতি প্রকাশ করেন। যেখানে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছেন যে, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ধারাবাহিক আক্রমণের ঘটনার মধ্যে সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। তাই বাংলাদেশ সরকারকে আমরা অনুরোধ করছি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষত হিন্দুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে। পাশাপাশি তাঁদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করাও জরুরি।’
এছাড়াও বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে যে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের প্রতিবাদে গতকাল অর্থাৎ সোমবার সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক সংগঠন প্রতিবাদ সভা করেছিল। কিন্তু সেই প্রতিবাদ সভায় ঢাকা পুলিশ হামলা করেন, যা নিয়েও নিন্দা করেছে ভারত। এদিকে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাঁকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।