প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সাড়ে ৩ মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু আরজি কর কাণ্ডের ঘটনা (RG Kar Case) এখনও নিষ্পত্তি হল না। কে বা কারা খুন করেছে কিছুই স্পষ্ট হচ্ছে না। এদিকে আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গত সেপ্টেম্বর মাসে টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল এবং আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছিল CBI। অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতারির পরেই সাসপেন্ড করেছিল রাজ্য সরকার।
জামিনের পথে হাঁটলেন অভিজিৎ!
আসলে কোনও সরকারি কর্মী গ্রেফতার হয়ে ৪৮ ঘণ্টার বেশি তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে থাকলেই, নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে সাসপেন্ড করতে হয়। সেই নিয়ম মেনেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল অভিজিৎকে। কিন্তু সেই গ্রেফতারির পর প্রায় আড়াই মাস কেটে গিয়েছে। তাই এবার জামিনের পথে হাঁটলেন অভিজিৎ। প্রথমে নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন টালা থানার প্রাক্তন ওসি। কিন্তু সেই আবেদনের বিরোধিতা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। তাদের দাবি, গত ৯ আগস্ট রাতে চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকে সন্দীপ এবং অভিজিতের মধ্যে মোবাইলে সবচেয়ে বেশি কথাবার্তা হয়েছিল। কল ডিটেলসে তা দেখা গিয়েছে।
জামিনে বাধা দিতে তৎপর CBI
এছাড়াও বেশ কয়েকটি ‘সন্দেহজনক’ মোবাইল নম্বরও উদ্ধার করা হয়েছিল ওসির ফোন থেকে। সে বিষয়ে আরও জেরা এবং অনুসন্ধান প্রয়োজন বলে আদালতে দাবি করে CBI। টালা থানা থেকে সিসি ক্যামেরার যে হার্ড ডিস্ক উদ্ধার করা হয়েছে, তা পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন বলেও দাবি তদন্তকারী সংস্থার। সে কারণে অভিজিতের জামিনের বিরোধিতা করছে তারা। কিন্তু পিছুপা হচ্ছেন না অভিজিৎ। এ বার তাই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন তিনি। চলতি সপ্তাহে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
তবে সেক্ষেত্রে CBI এর ওপর বড় চাপ পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ হাইকোর্ট যদি একবার টালা থানার প্রাক্তন ওসির জামিন মঞ্জুর করে তাহলে সিবিআইয়ের তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে আরও প্রশ্ন উঠবে। ইতিমধ্যেই CBI এর চার্জশিট নিয়েও চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তার উপর যদি জামিনের ভিত্তিতে ছাড়া পায় অভিজিৎ সেক্ষেত্রে ফের বিক্ষোভের পরিস্থিতি তৈরি হবে।