প্রীতি পোদ্দার, মুম্বই: মালয়েশিয়ার তৃতীয় ধনী ব্যক্তি হিসেবে বরাবর নাম কিনে এসেছেন টেলিকম টাইকুন আনন্দ কৃষ্ণন। কিন্তু তাজ্জব এর ব্যাপার হল তাঁর ছেলে ওয়েন জান সিরিপানিয়ো তাঁর বাবার ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পত্তি এবং গ্ল্যামারাস জীবন প্রত্যাখ্যান করে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হয়েছেন। এই ঘটনা সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।
চেন্নাই সুপার কিংসের স্পনসর ছিলেন আনন্দ কৃষ্ণন
এদিকে তাঁর পরিবার এক বিত্তশীল পরিবার ছিল। তাঁর বাবা আনন্দ কৃষ্ণনের টেলিকম ছাড়াও ব্যবসা স্যাটেলাইট, মিডিয়া, তেল, গ্যাস এবং রিয়েল এস্টেট সেক্টরেও ছড়িয়ে আছে। একসময় তিনি প্রাক্তন টেলিকম কোম্পানি Aircel-র মালিক ছিলেন। এছাড়াও একসময় IPL দল চেন্নাই সুপার কিংসের স্পনসর ছিল। অন্যদিকে ওয়েন জান সিরিপানিয়োর মা এম সুপ্রিন্দা চক্রবানের থাইল্যান্ডের রাজপরিবারের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। এই বিশাল সৌভাগ্যের উত্তরাধিকারী হওয়ার জন্য তৈরি হওয়া সত্ত্বেও সবকিছু ছেড়ে তিনি একটি বৌদ্ধ বিহারে যোগদান করার এবং সন্ন্যাসী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
১৮ বছর বয়সে বৌদ্ধ বিহারে যোগদান!
মাত্র ১৮ বছর বয়সে, ওয়েন আজান সিরিপানিও তার মায়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার জন্য থাইল্যান্ডে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি শুধুমাত্র একটি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার জন্য প্রথমে একটি বৌদ্ধ বিহারে যোগদান করার এবং সন্ন্যাসী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু এই অভিজ্ঞতা যে চিরকাল তাঁর জীবনের সঙ্গে সারাজীবন জড়িত থাকবে, সেটা সে কোনোদিনও বুঝতে পারেনি।
বর্তমানে তিনি একজন সম্পূর্ণরূপে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীতে পরিণত হয়েছেন। নিজের বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে ভেন আজান সিরিপানিও বনে একটি বৌদ্ধ বিহারে ভিক্ষুর মতো জীবনযাপন করছেন।
জানা গিয়েছে, ওয়েন জান সিরিপানিয়োর শৈশব কেটেছিল ব্রিটেনে। তাঁর দুই বোনের সঙ্গে ব্রিটেনে বড় হয়েছেন। তাঁর লালন-পালন, বিভিন্ন সংস্কৃতির জ্ঞান এবং জীবনের প্রতি স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে বৌদ্ধ শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট করেছিল। মোট ৮ টি ভাষা জানেন তিনি। সিরিপানিয়োর মতে, এভাবেই তিনি জীবনে শান্তির খোঁজ পেয়েছেন।
তবে ওয়েন আজান সিরিপানিও একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর জীবনযাপন শুরু করলেও, তিনি তার পরিবারের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য পূর্বের জীবনধারায় ফিরে আসেন। এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করেন। তারা মাঝে মাঝে পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করতে ভ্রমণ করে। তাকে একবার তার বাবা আনন্দ কৃষ্ণনের সঙ্গে দেখা করতে একটি প্রাইভেট জেটে ইতালি পৌঁছে ছিলেন।