প্রীতি পোদ্দার: সরকারী চাকরী পাওয়া সকলের কাছে চাঁদ পাওয়ার সমান। তাইতো দিনরাত চাকরিপ্রার্থীরা সরকারী চাকরী পাওয়ার জন্য নানা প্রিপারেশন নিচ্ছে। যাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বিহারের ভাগলপুরের বাসিন্দা অমিত কুমার। কোভিডের কারণে আড়াই বছরেরও বেশি সময় বেকার ছিলেন তিনি। এরপর বহু প্রতীক্ষার পর সরকারি স্কুলে শারীরিক শিক্ষক হিসাবে চাকরিও মেলে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। অল্প বেতনে সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে ওঠে। তাইতো দুপুরে শিক্ষকতা করে রাতে ডেলিভারি বয়ের কাজ শুরু করেছেন তিনি।
বেতন মেলে মাত্র ৮ হাজার টাকা!
জানা গিয়েছে, স্কুলের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক হিসাবে চাকরি পেলেও মাসের শেষে হাতে মেলে মাত্র আট হাজার টাকা। কিন্তু এই টাকায় সংসার চালাতে রীতিমতো মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় হয়।এই প্রসঙ্গে অমিত বাবু জানান, ‘২০২২ সালে অস্থায়ী শিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলাম ৮ হাজার টাকার বেতনে। পড়ুয়াদের জন্য অনেক খেটেছিলাম। রুটিনের বাইরে গিয়েও এক্সট্রা ক্লাস করিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পরিশ্রমের বিন্দুমাত্র কোনও মূল্য পেলাম না। গত আড়াই বছরে এক কানাকড়িও বেতন বাড়েনি। স্থায়ী শিক্ষকের যোগ্য কিনা, সেই পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি। অথচ যাঁরা আমার সহকর্মী তাঁরা স্থায়ী শিক্ষকতা অর্জন করে বেতন পাচ্ছেন ৪২ হাজার টাকা। আমার বেতনের ৫ গুণ বেশি।’
দুপুরে শিক্ষকতা রাতে খাবার ডেলিভারি
তিনি আরও বলেন যে, ‘চলতি বছরে চার মাসের বেতনও এখনও মেলেনি। এদিকে সংসার চালানো বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’বেলা খাবার জোটানোর জন্য মাথায় নানা চিন্তা ভাবনা ঘরে। অবশেষে সব লজ্জার মাথা খেয়ে শেষে অনলাইন ফুড ডেলিভারি সংস্থা জোমাটোতে ডেলিভারি এজেন্টের কাজ বেছে নিয়েছি।’। কিন্তু আচমকাই ফুড ডেলিভারি এজেন্ট কাজ কেন বেছে নিলেন জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, ‘৮ হাজার টাকার বেতনে সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে উঠেছিল। তখনই কী করা যায়, তার খোঁজ খবর নিতে শুরু করলাম। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, জোমাটোতে আংশিক সময়ের কাজ করা যায়। সেখানেই নাম লেখালাম।’
জানা গিয়েছে, অমিত প্রতিদিন স্কুল ছুটির পর বিকেল ৫ টা থকে রাত ১টা পর্যন্ত মানুষের বাড়ি-বাড়ি খাবার পৌঁছে দেন। স্কুল শেষে মোটর বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজে।