প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর প্রায় শেষের মুখে। আর এই সময়ে বাজারে চলে নতুন আলুর ঢল। কিন্তু এ বার ডিসেম্বর মাস পড়ে গেলেও বাজারে নতুন আলুর দেখা একদমই পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে আগামী ক’দিনের মধ্যেও বাজারে নতুন আলুর দেখা মিলবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তার উপর আবার রাজ্যে পুরনো আলুর মজুত করার জন্য ভিন রাজ্যে আলু রফতানিতে রাজ্য সরকার কড়াকড়ি শুরু করায় ফের কর্মবিরতিতে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আলু ব্যবসায়ীরা। তবে এবার চুপ থাকছে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
আলুর বস্তা প্লাস্টিকে ঢাকা দিয়ে পাচার!
চলতি বছর এমনিতেই রাজ্যে আলুর দাম বেশ চড়া। এই পরিস্থিতিতে দাম নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি ভিনরাজ্যে আলু ‘রফতানি’র ক্ষেত্রে কড়াকড়ি শুরু হয়েছিল। এর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নবান্নে বৈঠকেও বসেছিল সরকার পক্ষ। সেই বৈঠকে সরকার এবং ব্যবসায়ী, দু’পক্ষই আলুর দাম কমাতে উদ্যোগী হয়। তাতে বাইরের রাজ্যে আলু পাঠানোর ক্ষেত্রে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিলও হয়েছিল। কিন্তু প্লাস্টিক ব্যাগের আড়ালে আলু ভিন রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। অনেকে আবার পুলিশের নজর এড়াতে আলুর বস্তাগুলি প্লাস্টিকে ঢাকা দিয়ে পাচার করছে। যা রোধ করতে তৎপর হয়ে উঠেছে পুলিশ প্রশাসন। তবে ধর্মঘটকে একদমই ভয় পাচ্ছে না রাজ্য সরকার।
ধর্মঘট মেনে নেবে না রাজ্য সরকার!
রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট রুখতে যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য সরকার। এমনকী চরম সিদ্ধান্ত নিতে গেলেও পিছপা হবেন না কেউ। এদিকে আজ আবার ব্যবসায়ীদের অনুরোধে ফের বৈঠকে বসতে চলেছেন বেচারাম মান্না। এদিকে, আলুর ব্যবসায়ীদের ডাকা ধর্মঘট নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ টাস্ক ফোর্স। টাস্ক ফোর্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলের দাবি, আলু ব্যবসায়ীরা মুখ্যমন্ত্রীকে কথা দিয়েছিলেন ২৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করবেন। কিন্তু সেই অবস্থান থেকে তাঁরা সরে এসেছেন। ১০ নভেম্বরের পর থেকে আলুর দাম বাড়িয়ে কেজি প্রতি ২৮.৫ টাকা করা হয়েছে। বাধ্য হয়েই তাই বর্ধিত মূল্যে আলু কিনতে বাধ্য হচ্ছে আম জনতা।
এদিকে আলুর যোগান নিয়ে মুখ খুললেন প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বর্তমানে রাজ্যের হিমঘরগুলিতে প্রায় ৭ লক্ষ মেট্রিক টন আলু মজুত আছে। এদিকে ডিসেম্বর মাসে আলু খরচ হবে সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষ মেট্রিক টন। বাড়তি তিন লক্ষ মেট্রিক টন ভিন রাজ্যে না গেলে ক্ষতি হবে ব্যবসায়ীদের। কিন্তু বেচারামের দাবি, ৪০-৫০ জন আলু ব্যবসায়ী বাড়তি মুনাফার জন্য রাজ্যবাসীকে বিপাকে ফেলার লাগাতার চেষ্টা করছেন। যা কোনওভাবেই কাম্য নয়।।