প্রীতি পোদ্দার, আগরতলা: বাংলাদেশের (Bangladesh) সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে গত কয়েক দিন ধরেই দু’দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা যেন চরম আকার ধারণ করেছে। সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছেন ভারতীয়েরা। তার উপর ভারতের পতাকার অপমান করেছেন বাংলাদেশিরা। যার প্রতিবাদ হিসেবে এবার ত্রিপুরায় বাংলাদেশী পর্যটকদের হোটেল পরিষেবা বন্ধ করল সেখানকার হোটেল অ্যাসোসিয়েশন।
থাকার জন্য কোনো হোটেল বরাদ্দ নয় বাংলাদেশীদের
সূত্রের খবর, ত্রিপুরার হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (Tripura hotels association) একটি জরুরি সভায় সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, রাজ্যের সমস্ত হোটেলে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য নিষিদ্ধ হবে। এবং রেস্তরাঁতেও তাদের জন্য কোনও খাবার দেওয়া হবে না। এদিকে ত্রিপুরায় বাংলাদেশি পর্যটকদের উপস্থিতি সবসময়ই বিশেষভাবে নজর কাড়ে। বিশেষ করে আগরতলা এবং আশেপাশের এলাকায় বাংলাদেশি পর্যটকরা চিকিৎসা করাতে এবং ঘুরতে আসেন। কিন্তু বাংলাদেশ ভারতের জাতীয় পতাকার অপমান করায় এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে ত্রিপুরার হোটেল অ্যাসোসিয়েশন।
আসলে ত্রিপুরাতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। সেখানেও বাংলাদেশের তীব্র আগুনের প্রতিবাদের ঝড় বইছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে ফুঁসছে ত্রিপুরার বাসিন্দারাও। একের পর এক প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে। সেইরকমই বাংলাদেশি মিশনের কাছে বিরাট মিছিল বের করেছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে করা হয় এই মিছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে অন্তত ৫০জন প্রতিবাদকারী হঠাৎ করে ঢুকে পড়েন হোটেলে। তাদের দেখে ভয় পেয়ে যান সেখানকার স্টাফরা। আর তার জেরেই এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছল সেখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরা
সঠিক যোগাযোগের অভাব এবং আর্থিক লেনদেনে গোলযোগ
এছাড়া, হোটেল মালিকরা অভিযোগ করেছেন যে অনেক সময় পর্যটকদের সঙ্গে সঠিক যোগাযোগের অভাব এবং তাদের লেনদেনে অসুবিধা দেখা যায়। কিছু ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। এই প্রসঙ্গে হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের নাগরিকদের স্বাগত জানাই এবং তাদের জন্য হোটেল পরিষেবা প্রদানে বরাবরই আগ্রহী। তবে, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুরক্ষা এবং নিয়মাবলীর প্রতি সম্মান জানিয়ে তাই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
এদিকে এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নাগরিকদের উপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যারা চিকিৎসা বা ব্যক্তিগত কারণে নিয়মিত ত্রিপুরা ভ্রমণ করেন তাঁদের কাছে এটি একটি বড় সমস্যা হতে পারে। শুধু বাংলাদেশী নয়, ত্রিপুরার হোটেল ব্যবসায় বড়সড় প্রভাব পড়বে। কারণ চিকিৎসা এবং অন্যান্য কাজে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের কারণে ত্রিপুরার অর্থনীতিতে ভালো প্রভাব পড়ে। তবে এই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হোটেল ব্যবসার উপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। এর আগে বাংলাদেশে ভারতগামী বাসের উপর হামলা চালানো হয়েছিল। তা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন ত্রিপুরার মুখ্য়মন্ত্রী।