প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ কেটে গেল। দেখতে দেখতে বছর প্রায় শেষ হতে চলল। অথচ কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা এখনও সর্বশিক্ষা মিশন থেকে মেলেনি। বিভিন্ন স্কুলের উন্নয়ন তহবিলের টাকাও শেষ হয়ে যাওয়ায় স্কুলের ভাঁড়ার একদম শূন্য। এদিকে বিদ্যালয়ে আংশিক সময়ের শিক্ষক না রাখলে স্কুল চালানো একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ছে। সেক্ষেত্রে কোনো উপায় না পেয়েই তাই স্কুলগুলি নিজেদের ব্যবস্থাপনাতেই আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতন দিচ্ছে।
এখনও মেলেনি কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা
আর ফলে সেই টাকা জোগাড় করতে কোনও স্কুলে শিক্ষকেরা নিজেরাই চাঁদা দিয়ে আংশিক সময়ের শিক্ষক রাখছেন। কোথাও আবার স্কুলের প্রাক্তনীরা চাঁদা তুলে আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতন দিচ্ছেন। কোথাও আবার স্কুলের পুকুর, ধানজমি লিজ দিয়ে অথবা জলাশয়ের মাছ, জমির ধান ও ফল-আনাজ বিক্রি করে আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। কবে কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা মিলবে এ বিষয়ে জানতে সংবাদমাধ্যমের শিক্ষা দফতরের সর্বশিক্ষা মিশনের এক কর্তাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। শুধু তাই নয় তাঁকে এই ব্যাপারে এসএমএস করা হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি। পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি।
আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতন দিচ্ছেন প্রাক্তনীরা!
ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশনের আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতন দিতে এগিয়ে এসেছেন স্কুলের প্রাক্তনীরা। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজা দে জানিয়েছেন, তাঁদের স্কুলে একাদশ শ্রেণির বাণিজ্য শাখার কয়েকটি বিষয়ের শিক্ষক নেই। রসায়ন ও কলা বিভাগেরও বেশ কয়েকটি বিষয়ের শিক্ষক নেই। সেই খামতি পূরণ করতে হচ্ছে আংশিক সময়ের শিক্ষকদের দিয়ে। এছাড়াও তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের ১০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন ও ঐতিহ্যশালী এই স্কুলের প্রাক্তনীদের অনেকেই সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা এই স্কুলের আর্থিক হালের কথা শুনে এবং ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে আংশিক সময়ের শিক্ষকদের জন্য চাঁদা তুলে দিয়েছেন।’’
মাছ, ধান এবং ফল বিক্রি করে বেতন ব্যবস্থা
অন্যদিকে আবার, স্কুলের পুকুরের মাছ, জমির ধান এবং বাগানের ফল বিক্রি করে আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতন দিচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার দক্ষিণ চাতরা হাইস্কুল। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণাংশু মিশ্র সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, ‘‘আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতন মাছ, ধান, ফল বিক্রি করেই দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীকে বার বার চিঠি পাঠালেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।