প্রীতি পোদ্দার, বাঁকুড়া: আবাস যোজনার টাকা নিয়ে নানা তর্ক বিতর্ক লেগেই রয়েছে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে। অবশেষে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে আবাসের টাকা মিলতে চলেছে গ্রাহকরা। ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ থেকেই বাংলার আবাস যোজনার টাকা দেওয়া শুরুর করার কথা। তার আগে আবাসের টাকার দুর্নীতি রুখতে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে বিশেষ ক্যাম্প করে দফায় দফায় আবেদনকারী উপভোক্তাদের পরিচয় সহ নথি যাচাই করতে শুরু করেছে প্রশাসন। আর এই আবহেই আইনি জটিলতায় রাজ্যের আবাস প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ৫০০০ পরিবার।
সমীক্ষা সূত্রে দেখা গিয়েছে জেলায় প্রায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার পরিবার আবাস প্রকল্পের তালিকায় ছিল। সমীক্ষার পরে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার। অর্থাৎ অনেক পরিবারের নাম বাতিলের খাতায় গিয়ে ঠেকেছে। জানা গিয়েছে সমীক্ষায় সব থেকে বেশি নাম বাদ পড়েছে গঙ্গাজলঘাটি ও মেজিয়া ব্লকে। সেখানে সমীক্ষায় যথাক্রমে ২০ শতাংশ ও ১৭ শতাংশ পরিবার প্রকল্পের জন্য অযোগ্য বলে চিহ্নিত হয়েছে।
৫০০০ হাজার পরিবারের নাম বাতিল তালিকায়
অন্যদিকে অন্যান্য ব্লকে ৯-১১ শতাংশ পরিবার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। কিছু পরিবারের নাম তালিকায় থাকলেও সমীক্ষায় নেমে তাদের খোঁজ পায়নি জেলা প্রশাসন। সামগ্রিক ভাবে ৯৫ শতাংশ পরিবারে সমীক্ষা করা গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় কমপক্ষে ২২টি ব্লকেই দেখা যাচ্ছে এমন কিছু পরিবার রয়েছে যারা উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আইনি জটিলতায় উপভোক্তা তালিকার বাইরে রয়ে গিয়েছে। সংখ্যাটা গিয়ে ঠেকেছে প্রায় পাঁচ হাজারে।
গ্রামসভা করে তালিকা চূড়ান্ত
জেলার রাজ্যের আবাস প্রকল্পের সমীক্ষার কাজ সারা হয়ে গেলেও এখনও আইনি জটিলতায় আটকে রয়েছে এই উপভোক্তাদের তালিকা। আর তাঁদেরকে এই তালিকায় সংযোজন করার জন্য মাত্র এক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় রয়েছে। তাই সেই উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ করতে ইতিমধ্যেই প্রশাসন বিশেষ কমিটি গড়ে দরকারি নথিপত্র জোগাড়ের কাজ শুরু করে দিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রামসভা করে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। পরবর্তী দু’দিনের মধ্যে ব্লক ও জেলা কমিটি চূড়ান্ত তালিকা অনুমোদন করবে। এরপর আগামী ১৮-২০ ডিসেম্বরের মধ্যে নাম নথিভুক্তির পরেই রাজ্য সরকার উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের প্রথম দফার অর্থ পাঠাবে।
কী বলছেন জেলা শাসক?
এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়ার জেলা শাসক সিয়াদ এন জানান, “আমাদের লক্ষ্য জেলার প্রতিটি কাঁচাবাড়ির বাসিন্দা এই প্রকল্পের আওতায় আসুক। তবে পরিবারের কর্তার মৃত্যু ও তাঁর উত্তরাধিকারী সংক্রান্ত সঠিক নথি না থাকায় কিছু পরিবার সমস্যায় পড়েছে। তাই ব্লক ও মহকুমা স্তরে বিশেষ দল গড়ে সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বচ্ছতার সঙ্গেই সুষ্ঠু ভাবে সমীক্ষার কাজ সারা হয়েছে।”