শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ ফের একবার শিরোনামে কলকাতার ট্রাম পরিষেবা। তবে বলা ভালো, এবার এই ট্রামকে ঘিরে রাজ্যের ওপর রেগে লাল হল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে অমান্য করে এবং বিনা অনুমতিতে রীতিমতো কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাম এর ট্র্যাক লাইন তুলে দেওয়ার কাজ চলছে। কিছু কিছু জায়গায় লাইন তুলে দেওয়া হয়েছে আবার কিছু কিছু জায়গায় পিচ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে আর ঘটনায় রীতিমতো আকাশ থেকে পড়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিশেষ করে আবেদনকারী পক্ষ থেকে এমন এক কিছু কথা জানতে পেরেছে কলকাতা হাইকোর্ট যার পরে রাজ্যের বিরুদ্ধে রীতিমতো গর্জে উঠেছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। এখন আপনিও কি জানতে ইচ্ছুক যে কী হয়েছে? তাহলে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির ওপর।
তুলে দেওয়া হচ্ছে ট্রাম লাইন
আগামী কিছু মাসের মধ্যেই কলকাতায় আর ট্রাম পরিষেবা চলবে না সেই খবর তো সকলেই জানেন। এমনকি নতুন করে ট্রাম পরিষেবা যাতে শুরু করা যায় তাই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে বিক্ষোভ আন্দোলন। যদিও রাজ্য সরকার আর ট্রাম নতুন করে ফেরাতে উদ্যোগী নয় বলে সেটা সাফ সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্টকে কিছু না জানিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাম লাইন তুলে দেওয়ার কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলছে বলে অভিযোগ। এহেন ঘটনার খবর শুনেই চমকে গিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
আসলে তিলোত্তমার রাস্তায় ট্রাম থাকবে কি না তা খতিয়ে দেখতে ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট হাইকোর্ট পরামর্শদাতা কমিটি গড়ে দিয়েছিল। তবে অভিযোগ, এ বছরের ৪ জানুয়ারির পর আর সেই কমিটি কোনওররকম বৈঠক করেনি। অভিযোগকারীদের কাছ থেকে এই কথা শোনার পর স্বাভাবিকভাবেই রেগে গিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের কাছে জবাবদিহি চেয়েছে আদালত। আদালতের নির্দেশ, হাইকোর্ট বা পরামর্শদাতা কমিটির অনুমতি না নিয়ে কী করে ট্র্যাক তুলে ফেলা হল বা সেই জায়গা বুজিয়ে দেওয়া হল, সেই ব্যাপারে সন্তোষজনক লিখিত জবাব দিতে হবে রাজ্যকে। একইসঙ্গে বন্ধ রুটগুলির চালু করার ব্যাপারে কতদূর এগিয়েছে, তাও জানাতে হবে রাজ্যকে। আদালতের লিখিত বক্তব্য, যদি রাজ্যের ওই রিপোর্টে আদালত সন্তুষ্ট না হয়, তাহলে কঠোর নির্দেশ দিতে বাধ্য হবে ডিভিশন বেঞ্চ। এছাড়াও কেন এতদিন পরামর্শদাতা কমিটি এই বৈঠকে বসেনি সেটারও লিখিত জবাব তলব করা হয়েছে।
আদালতের আরও নির্দেশ, ২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি হবে। সেখানে এই সংক্রান্ত যাবতীয় রিপোর্ট দিতে হবে সব পক্ষকে। ফলে নতুন বছরে কী হয় সেদিকে নজর থাকবে সকলের।