শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ এসএসসি নিয়োগ ইস্যুতে ফের একবার সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হলো পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। মাসের পর মাস কেটে গেলেও এখনো অবধি বড়সড় প্রশ্নের মুখে রয়েছে ২৬,০০০ হাজারের বেশি শিক্ষক শিক্ষিকার চাকরি। এদিকে এই মামলায় বছর শেষ হওয়ার আগে আজ বৃহস্পতিবার শুরু হল মামলার শুনানি। আর এই শুনানি শুরু হতে না হতেই রাজ্যকে বড় প্রশ্ন করল সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলায় রাজ্য সরকারের ঠিক ভূমিকা কী? রাজ্য সরকার কী ভাবছে? শুধু তাই নয় যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীকে বাছাই করা কি সম্ভব সেই নিয়ে প্রশ্ন তুললো খোদ সুপ্রিম কোর্ট।
SSC মামলার শুনানি শুরু | SSC supreme court hearing |
বৃহস্পতিবার প্রথমে এসেছি মামলায় রাজ্যের আইনজীবীর বক্তব্য শোনেন প্রধান সুপ্রিম কোর্টের নতুন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। প্রধান বিচারপতি জানান যে, ‘রাজ্য মনে করে যে যোগ্য ও অযোগ্য-র তালিকা আলাদা করে তৈরী করা সম্ভব। সিবিআই এই নিয়ে একাধিক রিপোর্ট দিয়েছে।’ উল্লেখ্য, এর আগে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন কারাও বৈধ এবং কারা অবৈধ এই বিভাজন করা সম্ভব কিনা তা আজকের শুনানিতে দেখা হবে।
প্রশ্নের মুখে ২৬,০০০ চাকরিজীবির ভবিষ্যৎ
আজ নির্ধারিত সময় ১০:৩৫ মিনিট থেকে শুরু হয় মামলার শুনানি। এদিন প্রথমেই রাজ্যের হয়ে সওয়াল করছেন আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী। কলকাতা হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে ২০১৬ সালের পুরো নিয়োগপ্রক্রিয়াই বাতিল করা হবে, না কি যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের আলাদা করার নির্দেশ দেবে শীর্ষ আদালত, তা জানতে মুখিয়ে রয়েছেন সকলে। শুনানি শুরু হতেই এদিন প্রধান বিচারপতির মন্তব্য করেন, “নম্বর কারচুপি হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার নম্বর বৃদ্ধি করা হয়েছে।” তার পরেই তিনি রাজ্যের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বাছাই করতে রাজ্যের সম্মতি রয়েছে কি না। রাজ্যের আইনজীবী জানান, যোগ্য এবং অযোগ্য বাছাইয়ে তাঁদের সমর্থন রয়েছে। নিজেদের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে তাঁর সংযোজন, তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এই বিষয়ে আলাদা আলাদা তথ্য দিয়েছে।
এরপর এসএসসির আইনজীবী আদালতে জানান, নিয়োগ তালিকায় থাকা যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাই করা সম্ভব? তার পরেই এসএসসির উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, “আমাকে বোঝান কেন হাই কোর্ট বলল যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা সম্ভব নয়?” উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল স্কুল সার্ভিল কমিশন-এর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেইসময়ে হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করে। এর ফলে চাকরি হারা হন ২৫,৭৫৩ জন। সেইসঙ্গে সকলকে সুদ সহ বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।