প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দেখতে দেখতে প্রায় চার মাস পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ৯ আগস্ট রাতে আরজি করে সেই ডাক্তারি পড়ুয়ার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ভয়ংকর ঘটনার এখনও কোনো বিচার পাওয়া গেল না। সেই নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। এরপর হাইকোর্টে নির্দেশে যখন তদন্তে নামে CBI, তখন প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার তত্কালীন ওসি অভিজিত্ মণ্ডল। কিন্তু ৯০ দিনের মধ্যেই ছবিটা পাল্টে যায়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিতে না পারার ফলে নিয়মাফিক জামিন পেয়ে গিয়েছেন দু’জনই। আর তাতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে সকলে। এবার নিজের মেয়ের খুনের ঘটনায় নতুন করে তদন্ত শুরু করার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করল নির্যাতিতর পরিবার।
হাইকোর্টের দ্বারস্থ নির্যাতিতার বাবা, মা
সূত্রের খবর, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এবার নতুন মোড় এল। CBI এর তদন্তের ওপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না নির্যাতিতার বাবা-মা। তাই এবার নিজের মেয়ের এই খুনের ঘটনায় যথাযথ বিচার চাইতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নির্যাতিতার বাবা ও মা। তাঁদের দাবি, বর্তমান তদন্তে তথ্য প্রমাণ লোপাট হয়ে গিয়েছে। তাই তাঁরা চান, মেয়ের খুনের ঘটনায় ফের নতুন করে তদন্ত শুরু হোক। ইতিমধ্যেই সেই মামলার অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। আর এই মামলায় CBI কে যুক্ত করার নির্দেশ দিল আদালত।
কী অভিযোগ নির্যাতিতার বাবা ও মায়ের?
এদিন আদালতে নির্যাতিতার বাবা-মা অভিযোগ জানান যে খুব শ্লথ গতিতে চলছে তদন্ত প্রক্রিয়া। তাই বর্তমানে তদন্তে সঠিক প্রমাণ উঠে আসছে না। আশঙ্কা করা হচ্ছে, প্রভাবশালী মহলের চাপে তথ্য লুকিয়ে ফেলা হয়েছে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত তদন্ত নতুন করে শুরু করা জরুরি, না হলে ন্যায়বিচার অসম্ভব হয়ে পড়বে।” জানা গিয়েছে আগামী সোমবার আদালতে বিষয়টি ফের উল্লেখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিচারপতির তরফ থেকে। ইতিমধ্যে এই মামলায় ট্রায়াল শুরু হয়েছে এবং সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।
এদিকে চুপ করে বসে নেই জুনিয়র ডাক্তাররাও। যেদিন আরজি মামলায় জামিন পান সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিত্ মণ্ডল, সেদিন সন্ধ্যায় আরজি কর হাসপাতাল থেকে শ্যামবাজার মোড় পর্যন্ত মোমবাতি মিছিল শুরু হয়। এরপর সল্টলেক করুণাময়ী থেকে সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানও করে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। এবার দেখার পালা কতটা কার্যকরী হয়ে ওঠে এই আন্দোলন।