প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বর্তমান প্রজন্ম ভালবাসায় এখন লিভ ইন সম্পর্কে বিশ্বাসী। এককথায় যাকে বলা যায় প্রেম ভালবাসার স্থায়িত্ব খুবই ক্ষণস্থায়ী। কাজের এত ব্যস্ততার মাঝে প্রেম ভালবাসা নিয়ে ভাবতে কতজনই বা চায়। কিন্তু এদিকে আবার মনের মানুষ হতে হবে একদম খাঁটি নির্ভেজাল। তবে এমন মানুষ পাওয়া বেশ দুষ্কর। তবে এই যুগেও যে সত্যিকারের ভালবাসা নেই, তা বলা ভুল। আর সেই ভুল ধারণাকে প্রমাণ করল বিবেক পাঙ্গেনি এবং তাঁর স্ত্রী শ্রীজানা সুবেদীর প্রেমকাহিনি। নেট মাধ্যমের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই নেপালি জুটি।
ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই বিবেকের
জানা গিয়েছে, বিবেক জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানে পিএইচডি প্রার্থী ছিলেন। তবে স্ত্রী শ্রীজানা র সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল বহু বছর আগে। প্রায় ১০ বছর আগে বিবেকের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। যেহেতু দুজনেই একই স্কুলে পড়তেন আর বিবেক ছিলেন উঁচু ক্লাসে। আর সেখান থেকেই প্রথমে বন্ধুত্ব এবং তারপরে প্রেম। টানা ছয় বছর প্রেম করার পর বিয়ে করেন তাঁরা। এর পর দু’জনেই আমেরিকায় চলে যান। সেখানে নতুন জীবন শুরু করেন। কিন্তু সুখের সংসারে মারণ রোগের ছায়া পড়ে। ২০২২ সালে তার ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে।
পাশে ছিলেন স্ত্রী শ্রীজায়া
মারণ রোগ ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই শুরু হয় এই দুটি জীবনের। কারণ এই লড়াই শুধুমাত্র বিবেক এর নয়, এই লড়াই স্ত্রী শ্রীজানারও। প্রাণপণে স্বামীর সেবা শুরু করেন। যেন পুরান কাহিনীর সেই বেহুলা। কেমো চলাকালীন বিবেকের শারীরিক গঠন যখন ভাঙতে থাকে, তখন শ্রীজানা তাঁর স্বামীর দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার জন্য নিজের চুলও কেটে ফেলে। নেট দুনিয়ায় তাঁদের এই নিঃস্বার্থ ভালবাসা মনে ধরেছিল সকলের। বিবেক ও শ্রীজানার পাশে দাঁড়ান তাঁদের অগণিত ভক্ত। এই ভালবাসার কাছে হার মেনেছে যেকোনো শত্রুতা। তাইতো ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, বাংলাদেশ-সহ বহু দেশের মানুষ তাঁদের জন্য প্রার্থনা শুরু করেন।
কিন্তু এই মারণ রোগ শেষ পর্যন্ত তাঁদের ভালবাসার ঊর্ধ্বে গিয়ে দুটি জীবন ধ্বংস করে দিল। গোটা দুনিয়ায় শ্রীজানাকে একা রেখে চলে গেল বিবেক। গত ১৯ ডিসেম্বর, শত চেষ্টা করেও বিবেককে বাঁচানো যায়নি। শ্রীজায়া ও বিবেকের অপরিণত ভালবাসায় শোকে ভেঙে পড়েছেন নেটাগরিকদের একাংশ। এইসময় শ্রীজায়াকে মন শক্ত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে সকলকে।