প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: স্মৃতি, আবেগ, ভালোবাসা কোনো কিছুই সারাজীবন আগলে রাখা যায় না একটা সময় পর সবটাই বিলীন হয়ে যায়। যেমন কিছুদিন আগে বাংলার আবেগ মেট্রোকে ভুলতে হয়েছিল বাঙালিকে। এবার পালা বাস রুটের। এক কালে এই বাস রুটে ৭০টি বাস চলত। বাসে চেপে শয়ে শয়ে যাত্রীদের কেউ স্কুল যেত, কেউ কলেজ যেতেন, কেউ বা অফিস যেতেন। কিন্তু সে সব এখন এযুগে অতীত। আগে যাওবা মাত্র একটি মাত্র বাস ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চার বার চলত। এখন সেটাও বন্ধের মুখে। অটো-টোটোর দৌলতে এবার শ্রীরামপুর-বাগবাজার রুটে তিন নম্বর বাস এখন বন্ধ হওয়ার মুখে।
বন্ধ হল ৩ নম্বর রুট
এমনিতেই প্রশাসন এবং পরিবহন দফতরের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে বাসের বয়স ১৫ হলেই সেটি আর রাস্তায় নামানো যাবে না। তাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছেন বাস মালিক সহ যাত্রীরা। অনেক বাস বন্ধ হয়ে গেলে যাত্রাপথে নানা অসুবিধার মুখোমুখি হতে হবে এই ভেবে বেজায় চটে রয়েছে সকলে। তার উপর এই আবহে বন্ধ হল ৩ নম্বর রুটের সবেধন নীলমণি বাসটি। আসলে অনেক আগে থেকেই এই বাস বন্ধের নির্দেশ পাওয়া যাচ্ছিল। কারণ গত কয়েক বছর ধরেই এই রুটে বাসের সংখ্যা অনেকটাই কমে হয়েছিল। নতুন করে এই রুটে বাস নামিয়ে ব্যবসা চালাতে রাজি হননি বাস মালিকরাও। তাই এই রুট বন্ধ হতে বাধ্য হল।
কী বলছেন বাসের মালিক?
এই প্রসঙ্গে এই বাস এর শেষ বাসটির মালিক সুদীপ গোস্বামী জানিয়েছেন “যাত্রীরা শ্রীরামপুর থেকে কলকাতার বাগবাজার পর্যন্ত লম্বা রুট পছন্দ করত না। প্রায় সব যাত্রীই ছিলেন শর্ট রুটের। তার উপর, গত কয়েক বছরে অটো এবং টোটোর সংখ্যা অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। সুবিধা আরও ভরপুর উপভোগ করতে সকলেই টোটো অটোই বেশি ব্যবহার করে। এদিকে আবার শ্রীরামপুর থেকে বালি পর্যন্ত অংশে জিটি রোড মাঝে মধ্যে এতটাই সরু থাকে যে বাস গলানো খুব চাপের।”
বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠন, অল বেঙ্গল বাস–মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ এইভাবে গত চার বছরে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় ৪০টির কাছাকাছি বাসরুট বন্ধ হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন রুট বাঁচানোর জন্য কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এইভাবে এই কতদিন চলবে?’