প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দিনটা ছিল ২০২২ সালের ২২ জুলাই। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তথ্য এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate) দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল। শুধু পার্থর বাড়ি নয়, এদিন নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে অভিযান চালানো হয়েছিল পার্থের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। ED সূত্রে জানা গিয়েছিল, টালিগঞ্জের একটি আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছিল তারা। উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। একই সঙ্গে অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হানা দিয়েছিল।
আবাসন থেকে উদ্ধার লক্ষ লক্ষ টাকা
তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে বেলঘরিয়ার একটি আবাসনে অর্পিতার নামে থাকা দু’টি ফ্ল্যাট থেকে নগদে মোট ৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ৫ কোটি ৮ লাখ টাকার গয়না উদ্ধার হয়েছিল। উদ্ধার করে ইডি। সঙ্গে প্রচুর সোনার গয়নাও। ইডির দাবি, সব মিলিয়ে পার্থ ও অর্পিতার সমস্ত সম্পত্তির ১০৩ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকার সম্পত্তি এবং নগদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এছাড়াও প্রাথমিক দুর্নীতি মামলার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ইডির তালিকায় ছিলেন অনেকে। ২৮টি সংস্থা, ট্রাস্ট এবং ফার্মের নামও উঠে এসেছে তদন্তে। সংস্থা এবং ব্যক্তি মিলিয়ে এই মামলায় মোট অভিযুক্ত এর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪। তবে এদের মধ্যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়া কিছুদিন আগে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য-সহ মোট ছ’জনকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট পেশ ED র
তবে রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে রাজ্যে প্রাথমিক মামলায় সবচেয়ে বেশি টাকার দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মাধ্যমেই। চার্জশিটের ২০ নম্বর পাতায় ED জানিয়েছে, দু’জনের মিলিয়ে দুর্নীতির পরিমাণ এইমুহুর্তে প্রায় ১০০ কোটি ছাড়িয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তল্লাশি করে এখনও পর্যন্ত পার্থ-অর্পিতার নগদ এবং সম্পত্তি মিলিয়ে ১০৩ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেখানে দুর্নীতির পরিমাণ গিয়ে ঠেকেছে মোট ১৫১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকায়। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখনও পর্যন্ত ৫ টি চার্জশিট পেশ করা হয়েছে ED-র তরফে।
প্রসঙ্গত এই মামলায় ইডির প্রথম চার্জশিটে পার্থ, অর্পিতার নাম ছিল। একই বছর দ্বিতীয় চার্জশিটে নাম ওঠে মানিক ভট্টাচার্য, তাঁর স্ত্রী এবং পুত্র ছাড়াও নাম ছিল তাপস মণ্ডলের। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে ইডির দেওয়া তৃতীয় চার্জশিটে নাম ছিল কুন্তলদের। চতুর্থ চার্জশিটে অন্যতম অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র নাম ছিল। এ ছাড়াও আরও দু’টি নাম ছিল, যাদের মাধ্যমে টাকা নয়ছয় করা হয়েছিল দাবি করে ইডি। আরও দাবি যে এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত তাপসের থেকে পাওয়া নথিতেও তথ্য রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |