প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৫ এর আগমন ঘটলেও রাজ্যে একের পর এক পুরোনো দুর্নীতির মামলার জট যেন কাটতেই চাইছে না। আর সেই পুরোনো দুর্নীতিগ্রস্ত মামলার মধ্যে অন্যতম হল রেশন দুর্নীতি মামলা। দেড় বছর আগে ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (Enforcement Directorate)। সেই সময় থেকে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে এই দাপুটে নেতার বিরুদ্ধে। এর আগে একাধিকবার জামিনের আর্জি জানানো হয়েছিল কিন্তু প্রতিবার সেই জামিন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এই আবহে ফের বিচারভবনে উঠল মামলার শুনানি। আর তাতে তীব্র ভর্ৎসনার শিকার হতে হল ED-কে।
তদন্তের প্রতি ক্ষুব্ধ বিচারপতি
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিচার ভবনে ছিল, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জামিনের আর্জির শুনানি। কিন্তু সেই মামলায় ED জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জামিনের আর্জির বিরোধিতা করলে, বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তদন্তকারী অফিসার থেকে শুরু করে আইনজীবীকে। বিচারভবনে এদিন ED র বিশেষ আদালতে রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নতুন তিন অভিযুক্ত, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শান্তনু ভট্টাচার্য, ব্যবসায়ী হিতেশ চন্দক ও মিল মালিক সুব্রত ঘোষকে পেশ করা হয়। ED তাঁদেরকে পাঁচদিনের হেফাজতে নিতে চায়। কিন্তু সেক্ষেত্রে তাঁদের দুদিনের হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এবং হেফাজত নিয়েও তোলা হয় একাধিক প্রশ্ন।
টাকা সরানোর জন্য নকল গয়না বিক্রি!
এদিন বিচারপতি প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, কেন হেফাজতে চাওয়া হচ্ছে? ইডির জবাব, সাক্ষীদের সঙ্গে অভিযুক্তদের বসানো হবে। আর এতেই প্রশ্ন উঠছে বিগত নয়দিন ধরে অভিযুক্তরা ED হেফাজতে থাকাকালীন কী করেছে ইডি? তাতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দাবি, তাঁদের জেরা করার পাশাপাশি আরও দশজনকে জেরা করা হয়েছে। আর তাতে উঠে এসেছে একাধিক তথ্য। টাকা সরানোর জন্য নাকি নকল গয়না আসল বলে বিক্রি করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিচারক ইডিকে বলেন, তাঁরা পুলিশ নন। কিন্তু তদন্তের জন্য তাঁদের কিছু পদ্ধতি মানতে হবে। তাঁরা যেন শীঘ্রই কেন্দ্রীয় ফরেনসিকের কাছ থেকে সাহায্য নেন।
অন্যদিকে এর আগের শুনানিতে ইডির তরফে আদালতে দাবি করা হয়, রেশন দুর্নীতির তদন্তে একাধিক সরকারি নথি এবং সরকারি অফিসারের সিল পাওয়া গিয়েছে। আর তাতেই বিচারক প্রশ্ন করেন, যদি দুর্নীতি হয়, তাহলে আজ পর্যন্ত ওইসব সরকারি অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি কেন? জবাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসাররা বলেন, আমরা চুরির তদন্ত করতে গিয়ে রেশন-দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রচুর নথি পেয়েছি। সেইসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একথা শুনে বিচারক আরও বলেন, “ডিস্ট্রিবিউটার বা মিল মালিক যদি চুরি করে থাকেন, তাহলে এই ঘটনায় কীভাবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক যুক্ত হলেন? যদি ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আত্মীয়দের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে তাহলে সেই টাকা যে রেশন দুর্নীতিরই, তার প্রমাণ কোথায়?”
ফের শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে
এরপরেই বিচারক ED কে নির্দেশ দেয় রেশন দুর্নীতি হলে সেটার শুরু কোথায়, তা খুঁজে বের করুন। কিন্তু এদিন দীর্ঘ সওয়াল-জবাব হলেও, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জামিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে কোনও নির্দেশ মেলেনি। জানা গিয়েছে আগামী ৭ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এবার দেখার পালা সেদিন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এর জামিনের আবেদন গ্রাহ্য হবে কি না।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |