শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ এবারেও সুপ্রিম কোর্টে হল না ডিএ (Dearness Allowance) মামলার শুনানি। আরো দীর্ঘায়িত হল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মীদের একাংশের করা DA সংক্রান্ত মামলা। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেছেন মামলাকারী কর্মীদের অন্যতম প্রতিনিধি মলয় মুখোপাধ্যায়।
কী বলছেন মলয় মুখোপাধ্যায়?
ডিএ সংক্রান্ত যে মামলাটির কথা বলা হচ্ছে সেটা পঞ্চম বেতন কমিশন সংক্রান্ত। ২০১৬ সাল থেকে জারি রয়েছে এই মামলা। কিছু দিন আগে সামনে এসেছিল অ্যাডভান্স লিস্ট। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, তালিকায় মামলাটি ছিল ৭০৬ নম্বর ক্রমতালিকায়। মামলার নম্বর এতো পিছনে থাকায় প্রশ্ন উঠেছিল, জানুয়ারির ৭ তারিখ আদৌ শুনানি হবে কি না। অনিশ্চিয়তার মধ্যেও আশায় বুক বেঁধেছিলেন মামলাকারীরা। প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন দিল্লিতে। কিন্তু শুনানি হল না।
শুনানির নতুন তারিখ দেওয়া হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা পোস্টে জানিয়েছেন মলয় মুখোপাধ্যায়। তারিখের পর তারিখ কিন্তু সমস্যার সমাধান এখনো অধরা, সব মিলিয়ে যারপরনাই হতাশ মলয়। তবুও তিনি হাল ছাড়তে নারাজ।
মন খারাপ সরকারি কর্মীদের?
মলয় তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “মনটা ভারি বিষাদগ্রস্থ৷ কারন ডি.এ মামলায় ১৪ তম শুনানিতেও মহামান্য বিচারপতিদের সেই একই অভয়বাণী আজ সময় নেই, তাই আগামী মার্চ মাসে মামলা শোনা হবে৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই ডিভিশন বেঞ্চের সিনিয়ার বিচারপতি শ্রী ঋষিকেশ রায় আগামী ৩১ শে জানুয়ারি অবসর গ্রহন করবেন৷ (মার্চে তিনি কি ভাবে মামলা শুনবেন?) সেক্ষেত্রে আবারও নতুন বেঞ্চ!
বিচার কি হলো, তার থেকেও বড় কথা বিচার সম্পর্কে মানুষ কি ভাবলেন? বিচার ব্যবস্থার উপর যদি মানুষের আস্থাই চলে যায়, তাহলে গণতন্ত্রে এমন বিচার ব্যবস্থা অপ্রাসঙ্গিক৷ মানুষ আজ বিশ্বাস করছেন পশ্চিমবঙ্গের সরকারকে সুরক্ষা দিতে ডি.এ মামলা সুপ্রিম শুনানি কখনই হবে না৷”
এরপর তিনি লিখেছেন, “হয়তো কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজ্যসভার সাংসদ হবেন বা ‘অফিস অফ প্রফিট’ উপহার হিসেবে পাবেন৷ মানুষের ভাবনার উপর পৃথিবীর কোনও সুপ্রিমকোর্ট বেড়ি পরাতে পারে না৷ তাই বিচার ব্যবস্থার উপর মানুষের আস্থা রক্ষার স্বার্থেই আর ‘তারিখ-পে- তারিখ’ নয়, অবিলম্বে ডিএ মামলার রায় ঘোষনার প্রয়োজন৷ মাননীয় বিচারপতিদেরও ভেবে দেখা প্রয়োজন, ‘তারিখ পে তারিখ’ সংস্কৃতিতে তাদের ব্যক্তিগত বিশ্বাসযোগ্যতার সম্পর্কে জনমনে সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে না তো?”
দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে DA মামলা
এ প্রসঙ্গে জেনে নেওয়া দরকার, সুপ্রিম কোর্টে প্রথমবার এই মামলার শুনানির সময় বিচারপতির আসনে ছিলেন জাস্টিন দীনেশ মাহেশ্বরী এবং জাস্টিস ঋষিকেশ রায়। তখন ২০২২ সাল। এরপর ২০২৩, শুনানি হয়েছিল জাস্টিস দীনেশ মাহেশ্বরী এবং জাস্টিস সঞ্জয় কুমারের এজলাসে। ২৮ এপ্রিল, ২০২৩-এ হয়েছিল ডিএ মামলার শেষ শুনানি। এরপর অবসর নিয়েছেন জাস্টিস দীনেশ মাহেশ্বরী। এবার আরো একজন বিচারপতির অবসর নেওয়ার সময় আসন্ন। জাস্টিস ঋষিকেশ রায়ের অবসরগ্রহণের দিন ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি।