প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: প্রতিশ্রুতি মেনে গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ এর ডিসেম্বর থেকেই বাংলা আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা প্রদান শুরু করে দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। প্রত্যেক গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে সঠিক সময়ে ঢুকেছে ৬০ হাজার টাকা। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে উপভোক্তারা যেন নিজের বাড়ি নিজেই তৈরি করেন। আর সেই অনুযায়ী এবার রাজ্য সরকারের বাংলার বাড়ি প্রকল্পের আওতায় একসঙ্গে শুরু হতে চলেছে ১২ লক্ষ বাড়ি নির্মাণের কাজ। যা রাজ্যের সরকারি প্রকল্পের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে, এই প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন এবং নির্ধারিত সময়ে কাজ যাতে শেষ হয় তার জন্য বিশেষ কয়েকটি ব্যবস্থার নজরদারি করছে নবান্ন।
বাড়ি নির্মাণ সামগ্রীর কাঁচামাল নিয়ে কড়া পদক্ষেপ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে যেহেতু ১২ লক্ষ বাড়ি নির্মাণের কাজ একসঙ্গে শুরু হচ্ছে তাই সেক্ষেত্রে বাড়ি তৈরির জন্য রাজমিস্ত্রির এবং নির্মাণ সামগ্রীর চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যাবে। আর এই পরিস্থিতিতে কিছু কিছু বিক্রেতারা সুযোগ বুঝে বাড়ি নির্মাণের সামগ্রীর দাম বাড়ানোর চিন্তা ভাবনা করছে। সেই পরিকল্পনা যাতে বাস্তবায়িত না হয় অর্থাৎ বিক্রেতারা যাতে ন্যায্যমূল্যে জিনিস বিক্রি করে তার জন্য এবার প্রত্যেক এলাকার বিডিওদের নজর দিতে বলা হয়েছে। দরকার পড়লে সিমেন্ট, ইট, লোহা-সহ নির্মাণ সামগ্রী পেতে পারেন এমন ডিলারদের সঙ্গে উপোভোক্তাদের কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়ি নির্মাণ সামগ্রীর কাঁচামাল যাতে ঠিকঠাকভাবে সরবরাহ করা হয় সেই বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
পঞ্চায়েত মন্ত্রীর বৈঠক
বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি নির্মাণ প্রকল্প যাতে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয় তার জন্য গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া জেলায় একটি বৈঠক করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন একাধিক প্রশাসনিক কর্তারা এবং জেলাশাসকরা। কীভাবে বাড়ি তৈরির কাজে গতি আনা যাবে তা নিয়েই চলেছে বৈঠক। জানা গিয়েছে গত বুধবার রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর সকল জেলাকে একটি চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, প্রথম পর্যায়ের কাজ আগামী ৩-৬ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে, এবং অবশ্যই সেই কাজে যেন দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়ার যোগ্যতা থাকে।
এছাড়াও জেলাস্তরের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্লক এবং গ্রাম পঞ্চায়েতকেও প্রত্যেক মাসে অন্তত একবার বাড়ি তৈরির কাজ পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে এবং বিডিও অফিসে বাড়ি নির্মাণ সংক্রান্ত কন্ট্রোলরুম খুলতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে উপভোক্তাদের সচেতন করতে ভিডিও ও লিফলেটের মাধ্যমে প্রচার করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা প্রকল্পের নিয়ম-কানুন এবং কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে সচেতন হন।