প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্য থেকে যে জঙ্গি-ধরার অভিযান শুরু হয়েছে, সেই সূত্র ধরেই বার বার খবরের শিরোনামে উঠে আসছে বর্ধমানের খাগড়াগড় প্রসঙ্গ। আর এই খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত হল তারিকুল ইসলাম ওরফে সুমন। ওই বিস্ফোরণকাণ্ডে যে সকল জঙ্গি জড়িত রয়েছে, তাঁরা আরও একাধিক বড় নাশকতার ছক করছে। আর সেই সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে জেল থেকে বসেই নানা ছক কষছে ধৃত জঙ্গিরা। কারণ তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে জেলবন্দি তারিকুলই জেল থেকে বিভিন্ন সময় আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা এবিটি-র বেশ কয়েক জন জঙ্গিকে নানা নির্দেশ দিত। তাই এবার সেই বিষয়ে নড়েচড়ে বসল জেল কর্তৃপক্ষ।
বসতে চলেছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জ্যামার
জেলে বন্দী অবস্থায় থেকে বাইরের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের এই ঘটনা নতুন নয়। এর আগে এমন ঘটনা অনেকবার ঘটতে দেখা গিয়েছে। যার ফলে নানা ভাবে বিতর্কের মুখে পড়ছে জেল কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন উঠছে জেল বন্দীদের শাস্তির ধরণ দেখে। তাই এবার সেই সমস্যা দূর করতে রাজ্যের জেলে বসতে চলেছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জ্যামার। কারণ, এর আগে রাজ্যের জেলাগুলিতে যে সকল জ্যামার বসানো রয়েছে সেগুলো ফোর জি, ফাইভ জি নেটওয়ার্কে একেবারে কার্যকরী নয়। একমাত্র টু জি নেটওয়ার্কে কাজ করে। তাই জটিল সমস্যা নির্মূল করতে ‘টাওয়ার হারমোনিয়াস কল ব্লকিং সিস্টেম’ চালু হচ্ছে রাজ্যের জেলে।
সমস্যায় স্থানীয়রা
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রাজ্যের কারা দফতর প্রত্যেকটি জেলে জ্যামারের চরিত্র বদলাচ্ছে। এমনকি অত্যাধুনিক জ্যামার বসানোর জন্য দরপত্র আহবান বা টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করেই ফেলেছে। ধীরে ধীরে রাজ্যের সেন্ট্রাল বা কেন্দ্রীয় জেলগুলিতে চালু হবে এই জ্যামার। আপাতত পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে চালু হতে পারে প্রেসিডেন্সি কিংবা দমদম জেলে। কিন্তু এই ব্যবস্থা চালু হলে একদিকে যেমন জেলে অপরাধমূলক কাজে বন্ধ আসবে তেমনই উল্টো দিকে এটি চালু হলে সমস্যায় পড়তে পারেন জেল এলাকার বাসিন্দারা। কারণ টাওয়ার হারমোনিয়াস কল ব্লকিং সিস্টেম চালু হলে সংশ্লিষ্ট জেল এবং তার আশেপাশের এলাকায় ‘নো সিগন্যাল’ হতে পারে। যার ফলে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
আরও পড়ুনঃ বাড়ি বসেই সব পরিষেবা ও সার্টিফিকেট, চলে এল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলার পঞ্চায়েত অ্যাপ
এমনকি এই ধরনের সমস্যা ভিন রাজ্যে দেখা গিয়েছে। রাজস্থান বা কর্ণাটকে প্রতিটা জেলে টাওয়ার হারমোনিয়াস কল ব্লকিং সিস্টেম চালু হওয়ায় জেল ও তার আশেপাশের গোটা এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যায় পড়ে যায়। স্থানীয়রা আপত্তি করেন তাতে। পাশাপাশি বেঙ্গালুরুর পারাপ্পানা অগ্রাহারা সেন্ট্রাল জেলেও এই প্রক্রিয়া চালু করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল জেল কর্তৃপক্ষকে। তবে কারা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, জেল অফিসিয়াল বা আশেপাশের এলাকার কিছু নম্বর যাতে ছাড় পায় তার বন্দোবস্ত আগে থেকে রাখা থাকবে।