প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যের সকল সাধারণ মানুষের জন্য একের পর এক নানা উদ্যোগ নিয়ে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Government Of West Bengal)। ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনায় যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার জন্য যেমন কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী এবং তরুণের স্বপ্ন নামক প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। তেমনই রাজ্যের মহিলা, বেকার যুবক যুবতীদের জন্য একাধিক প্রকল্প চালু করা হয়েছে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে। যাদের মধ্যে অন্যতম হল লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, ঐক্যশ্রী, রুপশ্রী ইত্যাদি।
এমনকি রাজ্যের বেকার যুবক- যুবতীদের কাজ এবং আয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য একাধিক প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। এই রকমই একটি প্রকল্প হল উৎকর্ষ বাংলা। রাজ্যে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যাদের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো না হওয়ার কারণে বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারেনি। কেউ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে তো কেউ আবার দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। তাই এবার তাঁদের কাজের সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক নতুন প্রকল্প চালু করেছে, যার নাম উৎকর্ষ বাংলা।
আত্মনির্ভরশীল হয়েছেন ৬৬ মহিলা
রাজ্যে এই অসাধারণ প্রকল্প রূপায়নের দায়িত্বে রয়েছে কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তর। এতে বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সরকারী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর এই কাজ করে বর্তমানে অসংখ্য মেয়ে এবং মহিলারা কর্মজীবনে আত্মনির্ভরশীল হয়েছে। তেমনই রাজ্য সরকারের উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের মাধ্যমে শোলার কাজের প্রশিক্ষণ নিয়ে ইতিমধ্যেই স্বনির্ভর হয়েছেন বহরমপুর এলাকার হেকমপুরের প্রায় ৬৬ জন মহিলা। শোলা দিয়ে নানা ধরনের চমৎকার এবং আকর্ষণীয় শোলার তৈরি জিনিস বানিয়ে দেদার বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন বাজারে। বেশ লাভবানও হচ্ছে তাঁরা। আর এই কাজে এগিয়ে এসেছে রুবিনা, সনিয়া, ফরিদারাও।
পরিবারের হাল ধরতে এগিয়ে এসেছে রুবিনা,ফরিদারাও
শোলা তৈরি বিভিন্ন পুজোর সামগ্রীর সূক্ষ্ম কাজ থেকে শুরু করে হরেক রকমের শোলার জিনিসপত্র বানানো শেখান সেখানকার প্রশিক্ষক সামসুল শেখ। তিনিই এই উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের মাধ্যমে এই ৬৬ জন মহিলাকে শোলার কাজ শেখান। তাঁদের মধ্যে রয়েছে রুবিনা, সনিয়া, ফরিদারাও। রুবিনার পরিবারে পাঁচ ভাই, বোন রয়েছে। কিন্তু তাদের বাবা খুব অসুস্থ। বাড়িতে রোজগেরে লোক নেই। কাজ না করলে খুব সমস্যায় পড়তে হবে সকলকে। এদিকে তাঁর বাবা চান না বাড়ির মেয়ে বাইরে বেরিয়ে কাজ করুক। শেষ পর্যন্ত তাই শোলার কাজ শিখে বাড়িতেই শোলার বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতে পারছে রুবিনা।
আরও পড়ুনঃ রাঁধুনি, ওয়েটার, মিস্ত্রী পদে মাধ্যমিক পাসেই সরকারি চাকরি! আবেদন ২৪ ফেব্রুয়ারি অবধি
শুধু রুবিনা নয়, স্বনির্ভর হতে শিখেছেন ফরিদা বিবিও। তাঁর কথায় এতদিন স্বামীর রোজগারে কোনো রকমে সংসার চলত। অর্ধেক দিন না খেয়েই প্রায় দিন কাটাতে হত, তাই এবার সে সংসারের হাল ধরতে এবং স্বামীর পাশে দাঁড়াতে নিজে শোলার কাজ শিখতে শুরু করেন। আর ধীরে ধীরে সে সম্পূর্ণ কাজ শিখে এখন সে সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন যে অনেক মহিলারাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাজ করতে চান না। কিংবা নানা সমস্যায় তা হয়ে ওঠে না। তাই বাড়ি বসেই এখন মহিলারা উপার্জন করতে পারেন। তাঁদের হাতের তৈরি জিনিস বাজারে বেশ বিক্রিও হয়।
ISL-এ ভরাডুবির মাঝেই বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল, চাপ বাড়বে মোহনবাগানের?