বদলি নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত বিকাশ ভবনের, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নয়া পদক্ষেপে আশঙ্কায় শিক্ষকরা

Published on:

bikash bhawan

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে সরকারী কর্মীদের DA মামলার জট এখনও কাটেনি। তার উপর রাজ্যে শিক্ষক শিক্ষিকাদের ‘মিউচুয়াল ট্রান্সফার’ বা জেনারেল ট্রান্সফার নিয়েও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সমস্যা লেগেই রয়েছে। ২০২২ সালে রাজ্যে শিক্ষক বদলির পোর্টাল উৎসশ্রী বন্ধ রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। সেই যে বন্ধ হয়েছিল তারপর আর খোলার সম্ভাবনা দেখা যায়নি। প্রায় ২২০০-এর বেশি বদলির আবেদন থমকে রয়েছে জেনারেল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে। তবে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকার মিউচুয়াল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত দিয়েছে। কিন্তু এই সুখবরের মাঝে ঘটল এক বড় বিপত্তি। নতুন সমস্যায় পড়তে চলেছে শিক্ষকরা।

১১ বছর ধরে কোনো শিক্ষক নিয়োগ নয়

WhatsApp Community Join Now

সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, বর্তমানে রাজ্যে সরকারি স্কুলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯টি। মূলত পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে এই সমস্ত স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হয়ে থাকে। তবে এই স্কুলের নিয়োগ পদ্ধতি ২০১৪ সালে শেষ করা হয়েছিল। তারপর মাঝখানে কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ১১ বছর। কিন্তু এখনও কোনও শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় স্কুলগুলিতে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকার শূন্যপদ রয়েছে। পড়ুয়াদের পঠন পাঠনেও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

র‍্যাশনালাইজেশন পদ্ধতি চালু রাজ্য সরকারের

দিনের পর দিন সরকারী স্কুলে পড়ুয়াদের তুলনায় শিক্ষকদের সংখ্যা কম থাকায় স্কুলের পড়ুয়ারা বাকি স্কুলগুলোর তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে। তাই এবার এই সমস্যা দূর করতে সরকার এক নয়া পন্থা বেছে নিল। জানা গিয়েছে, এবার রাজ্য সরকার শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে র‍্যাশনালাইজেশন পদ্ধতি অবলম্বন করবে। র‍্যাশনালাইজেশন পদ্ধতি হল যে স্কুলে শিক্ষক বেশি এবার সেই স্কুলে বদলির প্রক্রিয়া চালু হবে।

বড় নির্দেশ বিকাশ ভবনের

তবে র‍্যাশনালাইজেশন পদ্ধতি চালু করার আগে তথ্য সংগ্রহ ভীষণভাবে জরুরি। তাই সম্প্রতি স্কুল এডুকেশন কমিশনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে সরকারি স্কুলে কোথায় কত শিক্ষক রয়েছেন কত দিন ধরে তাঁরা ওই স্কুলে চাকরি করছেন তার সম্পূর্ণ তথ্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিকাশ ভবনের তরফ থেকে।

এই আবহে শিক্ষক মহলে স্কুল এডুকেশন কমিশনের নির্দেশ হুমকি স্বরূপ ঠেকল। শিক্ষক মহলের একাংশের দাবি, প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ শূন্য আসন রয়েছে সরকারি স্কুলগুলিতে। প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগের পথ এদিকে শূন্য। সহকারি প্রধান শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষিকা কোনও স্কুলে নেই। এই পরিস্থিতিতে সরকারি স্কুলের দৈনন্দিন কাজকর্ম চলছে। তবে এবার বিকাশ ভবনের বিজ্ঞপ্তি বড় ফ্যসাদে ফেলল শিক্ষকদের।

আরও পড়ুনঃ সুপ্রিম কোর্টে DA মামলার শুনানির আগেই বড় পদক্ষেপ, চাপে পড়বে রাজ্য সরকার

পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু জানিয়েছেন উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বেশ কিছু সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা বাড়ির কাছে বদলির জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু তাঁদের বদলির আবেদনে সাড়া না দিয়ে সরকার র‍্যাশনালাইজেশন-র নামে নিয়োগ না করে শিক্ষকদের বদলি করতে চলেছে, যা সরকারি স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ভেঙে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সঙ্গে থাকুন ➥
X