প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন মামলায় একাধিকবার কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (Enforcement Directorate) তদন্ত চালিয়েছিল। এমনকি এর আগে কলকাতায় কোটি কোটি টাকার পাহাড়ও দেখা গিয়েছিল। তাও আবার খোদ রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়-র ফ্ল্যাটে। যদিও এর মাঝে অনেক ব্যবসায়ীর বাড়িতেও মিলেছিল কোটি কোটি টাকা। আর এই আবহে এবার ফের সকাল সকাল আর্থিক প্রতারণার মামলায় দক্ষিণ কলকাতার বেহালায় এক ব্যবসায়ীর বাড়ি ও হাওড়ার শিবপুরে তদন্তে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ED।
বেহালায় এবার তদন্তে নামল ED
জানা গিয়েছে, দীপক জৈন নামক এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সকাল সকাল হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED র আধিকারিকরা। এর আগে ব্যাঙ্ক প্রতারণা মামলায় গত বছর ডিসেম্বর মাসে সঞ্জয় সুরেখা নামক আরেক ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ছিল ED। স্টিল কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৪ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। নগদ টাকার পাশাপাশি ৬টি বিলাসবহুল গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়। ভয়ংকর আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। এবার ওই ব্যাঙ্ক প্রতারণার সূত্র ধরেই দীপক জৈনের বাড়িতে আজ ইডি হানা দিয়েছে।
ঋণ দেওয়া হয়েছিল ৬২০০ কোটি টাকা!
এদিকে এই ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনায় ED সূত্রে জানা গিয়েছে যে, বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে ৬০০০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও জানা গিয়েছে ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই ১০ বছর ধরে ১৬টি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ঋণ দেওয়া হয়েছিল ৬২০০ কোটি টাকা। এবং প্রতিটি ব্যাঙ্কে ব্যবসায় ব্যাপক লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বদলি নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত বিকাশ ভবনের, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নয়া পদক্ষেপে আশঙ্কায় শিক্ষকরা
তারপরেই প্রতারণার পর্দা ফাঁস হতেই ২০১৯ সালে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়। আর সেই মামলার তদন্তের দায়ভার নেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। ২০২২ সালে সিবিআইয়ের FIR এর ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে ED। আর তাতেই সঞ্জয় সুরেখাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনায় জর্জরিত ব্যবসায়ীদের তলব করতে মাঠে নামেন ED। গতবছর ডিসেম্বরে মোট ১৩টি স্থানে এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হানা দিয়েছিল ED। এরপর নতুন বছর পড়তেই দীপক জৈন নামক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।