প্রীতি পোদ্দার, মুর্শিদাবাদ: বারবার দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) দলের সকলকে বিতর্কিত মন্তব্য না করার জন্য নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু কে কার কথা শোনে। ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে ভরতপুরের হুমায়ুন কবীরের একাধিক বিতর্কিত কথায় কিছুতেই যেন লাগাম লাগানোই যাচ্ছে না। আর এই আবহে ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের এক চরম বিতর্কিত মন্তব্য প্রকাশ্যে এল।
কিছুদিন আগে তিলোত্তমাকাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তদন্তে রাজ্য পুলিশের কিছু ভুল ছিল বলে এমনই মন্তব্য করেছিলেন তিনি। যা নিয়ে শাসকদলের অন্দরে নানা তর্ক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এবার সেই রেশ কাটতে না কাটতেই আরও এক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক, প্রাক্তন IPS হুমায়ুন কবীর। তাঁর মুখে শোনা গেল আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের নাম।
জানা গিয়েছে গত বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। আর সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ”লোকমুখে প্রায় শোনা যায় যে খারিজি মাদ্রাসায় সন্ত্রাসবাদ শেখানো হয়ে থাকে কিন্তু আমি কখনও খারিজি মাদ্রাসা দেখিনি। তবে আমি মনে করি সন্ত্রাসবাদ শেখানো হলে শুধু খারিজি মাদ্রাসায় কেন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও সেই পন্থা শেখা যায়।”
ওসামা বিন লাদেনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হুমায়ুন
এছাড়াও হুমায়ুন কবীর বলেন যে, “ যদি শুধু খারিজি মাদ্রাসায় যদি সন্ত্রাসবাদ শেখানো হত তাহলে, ওসামা বিন লাদেন কীভাবে একজন বড় সন্ত্রাসবাদী হলেন? উনি তো লন্ডনে অক্সফোর্ডে গিয়ে ইংরাজি পড়েছেন। আল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি, ম্যানেজমেন্ট পড়েছেন। অর্থাৎ তিনি খুবই শিক্ষিত। তবুও তিনি এক বড় সন্ত্রাসবাদী।” তবে শুধু ওসামা বিন লাদেন নয় ড্যানিয়েল পার্ল হত্যাকাণ্ডের প্রধান ‘নায়ক’ ওমর শেখকে নিয়েও তিনি নানা মন্তব্য করেন যা দলকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলছিল।
ওমর শেখকে নিয়ে ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন যে, “ওমর শেখ বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্স থেকে পড়াশোনা করেছেন। তারপর সে আতঙ্কবাদী হয়ে বসনিয়া চলে গিয়েছিল যুদ্ধ করতে। এরপর সেখানে টিকতে না পেরে পাকিস্তান চলে যায়। সেখানেই ট্রেনিং নিয়ে কুখ্যাত জঙ্গি হয়ে ওঠেন।” তবে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সকলে সন্ত্রাসবাদী হয় না, আশ্রম থেকেও অনেকে সন্ত্রাসবাদী হয়, যার অন্যতম উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রমের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজের নাম।
বাদ যায়নি ভারত সেবাশ্রমের সন্ন্যাসীর কথা!
তাঁর কথায় ওই সন্ন্যাসী নাকি বেলডাঙায় আশ্রমের আড়ালে মাঝেমাঝে ওখানে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করতেন। যখন সেখানে হুমায়ুন কবীর পুলিশ সুপার ছিলেন,তখন একবার কার্তিক মহারাজকে ডেকে পাঠানো হলে তিনি ভয়ে আসেনি। ইতিমধ্যেই হুমায়ুন কবীরের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে করা মন্তব্যে রীতিমত বিতর্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়। পাশাপাশি বিরোধী দলের মধ্যেও শুরু হয় নানা সমালোচনা।