পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ বর্তমানে সময় কাজের যা পরিস্থিতি তাতে একটা ভালো কাজ পেতে কালঘাম ছুটছে চাকরি প্রার্থীদের। তাই যাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে তারা চাকরির দিকে না গিয়ে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করার চেষ্টা করছেন। এক্ষেত্রে অনেকেই কিসের ব্যবসা করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তাদের জন্য আজকের প্রতিবেদনে একটি দুর্দান্ত ব্যবসার আইডিয়া রইল (Unique Business Idea)। যেটা একবার শুরু করলে খদ্দেরের কোনো অভাব হবে না, আর প্রতিমাসে নিশ্চিন্তে ৪০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।
ভারতীয় জন ঔষধি কেন্দ্র | Bhartiya Jan Aushadhi Kendra Business Ideas
শরীর খারাপ হলে সবাই ডাক্তার দেখতে যান, এরপর ডাক্তারবাবু যে ওষুধ লেখেন সেগুলি খেলে তবেই রোগ সারে। অথচ যে ওষুধের নাম বা ব্র্যান্ড ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে লেখেন সেটার দাম অনেক ক্ষেত্রেই বেশি হয়ে যায়। এই সমস্যার থেকে সাধারণ জনগণকে উদ্ধার করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গোটা দেশে ১০,০০০ এরও বেশি জেনেরিক ওষুধের দোকান চালু করেছেন। যেখানে ১৮০০ রকমের ওষুধ পাওয়া যাবে একেবারে কম দামে বা বলা ভালো সাধারণ দোকানের তুলনায় প্রায় ৯০% কম দামে পাওয়া যাবে। তাই বহু গরিব ও মধ্যবিত্তরা এখন থেকেই ওষুধ কেনেন। সেই কারণেই আপনি যদি একটি জন ঔষধি কেন্দ্র চালু করেন তাহলে মানুষের উপকার যেমন হবে তেমনি আপনিও মাসে অনায়াসে ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা আয় করতে পারবেন।
কীভাবে শুরু করবেন ভারতীয় জন ঔষধি কেন্দ্র? | How to start Bhartiya Jan Aushadhi Kendra
আপনি যদি ভারতী জন ঔষধি কেন্দ্র চালু করতে চান তাহলে সবার প্রথমে আপনাকে একটি দোকান ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে। নূন্যতম ১২০ বর্গ ফুটের একটি দোকান ভাড়ায় নিতে হবে বা আপনার নিজের হলে আরও ভালো হয়। এরপর আপনাকে দোকান চালু করার জন্য একটি ফার্মাসিস্ট লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়বে। আপনার চেনা জানার মধ্যে কেউ যদি ফার্মাসিস্ট কোর্স করে থাকে তাহলে তার সাথে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তাহলেই লাইসেন্স পেতে অসুবিধা হবে না। আর যদি সেটা না হয় তাহলে কোনো একটি ফার্মাসিস্টের থেকে লাইসেন্স ভাড়া নিতে হবে।
লাইসেন্স পাওয়ার পর ভারতীয় জন ঔষধি কেন্দ্র চালু করার জন্য আবেদন করতে হবে। এই আবেদন পক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইন। এই আবেদনের জন্য আপনাকে মাত্র ৫০০০ টাকা খরচ করতে হবে। একইসাথে দোকানে ব্যবসা করার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত বা মিউনিসিপালিটি থেকে ট্রেড লাইসেন্স ও ইনকরপোরেশন সার্টিফিকেট করতে হবে। এই আবেদন করার পাশাপাশি দোকানে ওষুধ রাখার জন্য আসবাবপত্রের কাজ চালু রাখতে হবে। কারণ ওষুধের দোকানের জন্য আবেদন করলে দোকানের লাইসেন্স দেওয়ার আগে ভেরিফিকেশন হয়। সেই সময় দোকান অন্তত ৭৫% তৈরী থাকতে হবে।
অনলাইনে আবেদনের পদ্ধতি । Online Application for Registration of Pradhan Mantri Bhartiya Jan Aushadhi Kendra
অনলাইনে ভারতীয় জন ঔষধি কেন্দ্র চালু করার জন্য নিচে দেওয়া পদ্ধতি ফলো করতে হবে,
- প্রথমেই অফিসিয়াল ওয়েবসাইট janausadhi.gov.in এ চলে যেতে হবে।
- এরপর সেখান থেকে ‘Apply for Kendra’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। সেখান থেকে নতুন আবেদনের জন্য আবেদনের পেজ খুলে যাবে।
- নতুন যে পেজ খুলল সেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এখানে বিস্তারিতভাবে সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে নিতে হবে।
- সমস্তটা সঠিকভাবে চেক করে নেওয়ারপর রেজিস্ট্রেশন সাবমিট করলেই আপনার অনলাইন আবেদন সম্পন্ন হবে।
ভারতীয় জন ঔষধি কেন্দ্রের আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস | Documents needed for Bhartiya Jan Aushadhi Kendra Registration
- আবেদনকারীর আধার কার্ড
- ফার্মাসিস্ট লাইসেন্স
- প্যান কার্ড
- চালু মোবাইল নাম্বার
- ঠিকানার প্রমাণ পত্র
ভারতীয় জন ঔষধি কেন্দ্র থেকে কত টাকা আয় হতে পারে? How much You can Earn from Bhartiya Jan Aushadhi Kendra?
শুরুতেই জানানো হয়েছিল সাধারণত দোকানের তুলনায় ৯০% পর্যন্ত কম দামে ওষুধ বিক্রি করা হয় ভারতীয় জন ঔষধি কেন্দ্রে। তাই অনেকেই ভাবছেন এক্ষেত্রে কতটাকা লাভ থাকতে পারে? এক্ষেত্রে জন্যে রাখা ভালো। আপনি যদি দোকান চালু করার পর মাসে ৫ লক্ষ টাকার ওষুধ কেনেন বা অর্ডার করেন তাহলে সরকারের তরফ থেকে ১৫% বা সর্বোচ্চ ১৫,০০০ টাকার সহায়ক অর্থ প্রদান করা হয়। এছাড়া কিছু এলাকায় দোকান তৈররি জন্যও কিছু এক্সট্রা আর্থিক সহায়তা করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ নতুন পে কমিশন অনুমোদনের পর DA বাবদ কত ক্ষতি হচ্ছে বাংলার কর্মীদের? হিসেব ঘুম ওড়াবে
এখানেই শেষ নয়, যে ওষুধ বিক্রি করবেন তার উপর ২০% লাভ থাকে। অর্থাৎ যদি আপনি দিনে ১০,০০০ টাকার ওষুধি বিক্রি করেন এমআরপি এর হিসাবে, তাহলে প্রতিদিন ২০০০ টাকা লাভ করতে পারবেন। অর্থাৎ প্রতিমাসে আপনার আয় হবে ৫২,০০০ টাকা (চার দিন দোকান সাপ্তাহিক বন্ধ)। এর মধ্যে যদি দোকানের ভাড়া ৫০০০ টাকা, একজন কর্মচারীকে ৬০০০ টাকা, ফার্মাসিস্ট লাইসেন্স ভাড়া ৭০০০ টাকা ও ইলেকট্রিক খরচ বাবদ ১৫০০ টাকা বাদ দেন তাহলেও প্রায় ৩২,০০০ টাকা লাভ করা সম্ভব। এর সাথে যদি আপনি মাসে ৫ লক্ষ টাকার ওষুধ অর্ডার করেন তাহলে অতিরিক্ত ১৫,০০০ টাকা আয় করা সম্ভব। হয়তো শুরুতেই এতটাকা আয় হবে না তবে কয়েক মাসের মধ্যেই আপনি প্রতিমাসে ৪০,০০০ থেকেই ৫০,০০০ টাকা লাভ করতে পারবেন।