প্রীতি পোদ্দার, শিলিগুড়ি: শুধু কলকাতা নয়, জনসংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ার নিরিখে একই তালে বাড়ছে যানবাহনের চাপ বাড়ছে একাধিক জেলায়। যার মধ্যে অন্যতম হল শিলিগুড়ি। সেখানে প্রতিনিয়ত চাপ বাড়ছে যানবাহনের। তার ফলে গত কয়েক বছরে যানজট সমস্যায় বেশ ভুগতে হচ্ছে সাধারণকে। তাইতো শহরের বিকল্প পরিবহণ হিসেবে মেট্রো রেল বা মনোরেলের তৈরি দাবি বেশ কিছু মাস ধরে উঠে আসছে।
শিলিগুড়িতে মেট্রো রেল!
কিন্তু শিলিগুড়িতে মেট্রোরেল বা মনোরেল বানানোর জন্য কোনও প্রকার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় দরকার। এমনকি গত অর্থবর্ষের বাজেটেও কেন্দ্রীয় সরকার তার সমীক্ষার জন্য অর্থ বরাদ্দ অবধি করেনি। যার জেরে বেশ ক্ষুব্ধ শহরবাসী। এমনকি এও প্রশ্ন উঠেছে যে রাজ্য সরকারই হয়ত এমন কোনও প্রস্তাব পাঠায়নি। কিন্তু সাধারণের দাবি, রাজ্য এবং কেন্দ্র দুই সরকারকেই যৌথভাবে এই প্রকল্পের জন্য পদক্ষেপ করতে হবে। তাহলেই মিটবে এই যানজটের সমস্যা। তবে সম্প্রতি শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ মেট্রো বা মনোরেল চালু করার জন্য প্রস্তাব পাঠালেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের কাছে।
রেল মন্ত্রীর কাছে মেট্রোরেলের প্রস্তাব বিধায়কের
২০১৬ সালে শিলিগুড়ি পুরসভার কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা সুজয় ঘটক প্রথম রেলবোর্ডের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে, শহরে অন্তত মেট্রো রেলের জন্য সমীক্ষা করা হোক। তিনি সেই প্রস্তাবে জানিয়েছিলেন যে এনজেপি থেকে নকশালবাড়ি পর্যন্ত অন্তত সমীক্ষা হোক। কিন্তু কেন্দ্র তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপই করল না। কেন করা হল না এই নিয়ে এখনও উত্তর পাওয়া যায়নি। সেই থেকে এখনও সাধারণের দাবি মানা হয়নি। এদিকে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কমিশনারেটের এলাকাও। অথচ বাড়েনি বাড়তি যান সামাল দেওয়ার ব্যবস্থা। তাই ফের বিধায়ক শংকর ঘোষের মাধ্যমে মেট্রো রেল চালু করার প্রস্তাব পাঠায় কেন্দ্রের কাছে।
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিক পাশে ইন্ডিয়ান নেভিতে চাকরির সুবর্ণ সুযোগ, দেখে নিন অনলাইনে আবেদনের পদ্ধতি
কী কী দাবি করা হয়েছে?
এদিন সেই প্রস্তাবে শংকর ঘোষ জানিয়েছেন, শিলিগুড়ির পরিবহণ ব্যবস্থা আরও দ্রুত করে তুলতে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করে তুলতে অন্ততপক্ষে শিলিগুড়ি থেকে খড়িবাড়ি পর্যন্ত মেট্রো বা মনোরেল চালু করা হোক। তবে শুধু মেট্রো বা মনোরেল নিয়ে নয়, রেলমন্ত্রীর কাছে আরও একগুচ্ছ দাবির প্রস্তাব পেশ করেছেন বিধায়ক। বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেন চালু করা থেকে শুরু করে শিলিগুড়ি ও পাটনার মধ্যে ট্রেন, কোচবিহার বা আলিপুরদুয়ার ও কলকাতার মধ্যে ট্রেন, কোচবিহার বা আলিপুরদুয়ার থেকে দক্ষিণ ভারতের ট্রেন চালু করার মতো প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে শিলিগুড়ির বিধায়ক এর তরফ থেকে।
এছাড়াও বর্তমানে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে শিয়ালদা বা হাওড়ায় আসার শেষ ট্রেন পাওয়া যায় রাত ৮ টা ৩০ মিনিটে। তারপর রাতে আর কোনো ট্রেন নেই। এদিকে আবার ভোর-সকাল থেকে ট্রেন আছে। তাই রাতের ট্রেনে সময় বর্ধিত করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বিধায়ক শংকর ঘোষ প্রস্তাব দিয়েছেন রাত ১০ টা ৩০ মিনিটের পরে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতা পর্যন্ত ট্রেন চালু করার। এর পাশাপাশি শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং বাগরাকোট যাওয়ার জন্য শিলিগুড়ি স্টেশনের কাছে যাত্রীদের জন্য একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা। তবে এখনও সেই প্রস্তাবে কেন্দ্রের তরফে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।