প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: টোটোর (Electric Rickshaw) সমস্যায় জেরবার বিভিন্ন এলাকা। রাস্তায় রাস্তায় তাদের দাপট এতটাই বেড়েছে যে নিত্যযাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠেছে। ঠিক একই ভয়ংকর অবস্থা হাওড়া শহরে। হাওড়া শহরকে যানজট মুক্ত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশ। কিন্তু বাধ সাধছে বেআইনি ও নিয়ন্ত্রণহীন টোটো চলাচল। দিনের পর দিন টোটোর সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে রাস্তা দিয়ে হাঁটা চলা করার জো নেই। তাই এবার টোটোর জন্য নিত্যযাত্রীদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেই কারণে এবার বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করল হাওড়া প্রশাসন।
হাওড়া প্রশাসনের তরফ থেকে বড় নির্দেশ
নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাওড়া শহরে রমরমিয়ে চলছে অবৈধ টোটো। গজিয়ে উঠেছে বেআইনি টোটো তৈরির কারখানা। শহরে প্রায় চল্লিশ পঞ্চাশ হাজার টোটো চলে। যার মধ্যে বেশিরভাগ অবৈধ। সম্প্রতি জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য পরিবহণ দফতর থেকে রাজ্যের সমস্ত আঞ্চলিক পরিবহণ বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, গ্রামাঞ্চলে চলা সব ই-রিকশা বা টোটোকে বাহন পোর্টালের মাধ্যমে নথিভুক্ত করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সেখানে চালকের নাম, বাসস্থানের ঠিকানা, আধার বা ভোটার কার্ড জমা দিতে হবে। যাঁরা দিতে পারবেন না, তাঁদের টোটো রেজিস্ট্রেশন করা যাবে না। আসলে টোটোর সঙ্গে যেহেতু বহু মানুষের রুজি-রুটি জড়িয়ে রয়েছে, তাই বেআইনি টোটো বন্ধ না করে তা সঠিক নিয়মে বাঁধতে রাজ্য পরিবহন দফতর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ‘আর প্রকল্প আসবে কি না’! শিয়ালদা লাইনে কাজে বাধা পেয়ে বিস্ফোরক পূর্ব রেল, চিঠি যাবে নবান্নে
নিজস্ব গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যাত্রী বহন করার নির্দেশ
আর এই নির্দেশ পাওয়া মাত্রই এবার টোটোর রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম চালু করল হাওড়া জেলা প্রশাসন। এর জন্য এক দিকে যেমন গ্রামীণ হাওড়ার পঞ্চায়েত এলাকায় চলা সমস্ত বেআইনি টোটোর রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুরু হয়েছে, ঠিক তেমনই হাওড়া পুরসভা এলাকায় চলা সমস্ত টোটোকে নথিভুক্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর। এছাড়াও পরিবহণ দফতর নির্দেশ দিয়েছে, রেজিস্ট্রিকৃত টোটোগুলি একমাত্র নিজস্ব গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যাত্রী বহন করতে পারবে। কোনও ভাবেই জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক, বাস চলে এমন রাস্তা এবং বড় রাস্তায় টোটো চালানো যাবে না। এর পাশাপাশি নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে যে কোনও টোটোর মালিকের বাড়ি যদি কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতের শেষ প্রান্তে হয়, তা হলে তিনি আবেদনের ভিত্তিতে পাশের পঞ্চায়েত এলাকাতেও টোটো চালাতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ ৩১ জানুয়ারি শেষ সুযোগ, রাজ্য সরকারের জনদরদি প্রকল্পে নাম লেখালেন ২১ লক্ষ মানুষ
প্রশাসনের এই নির্দেশ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে। অনেকের মতে এত নির্দেশের পড়ে আদেও কি সম্ভব হবে হাওড়ায় এই বেআইনি টোটোর দাপট। এই প্রসঙ্গে হাওড়ার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক জানান, এই টোটোগুলিকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার সুবিধা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ২০ হাজার টোটো চলছে বলে একটা হিসাব পাওয়া গিয়েছে। এর বাইরে কোনও টোটোকে আইনি অনুমোদন দেওয়া হবে কিনা, তা নির্ধারিত রুটের টোটোর সংখ্যা ও চাহিদা দেখে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে।