প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত শনিবার শিয়ালদহ আদালতে বিচারক অনির্বাণ দাস আরজি কর কাণ্ডে অন্যতম দোষী হিসেবে ঘোষিত করে সঞ্জয় রায়কে। এবং গতকাল অর্থাৎ সোমবার তার শাস্তিস্বরূপ যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে শিয়ালদা আদালতের এই রায় একদমই মানতে পারছে না রাজ্য সরকার। সঞ্জয়ের আমৃত্যু কারাদণ্ড না দিয়ে ফাঁসির দাবি তুলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই আবহে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার হাইকোর্টে বিচারক শুভেন্দু বসাক এর ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকার সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে মামলা তোলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর উপর ক্ষোভ প্রকাশ মমতার
এদিকে আরজি কর কাণ্ডের অন্যতম দোষী সঞ্জয় রায় এর ফাঁসির না হওয়ায় নির্যাতিতার বাবা মার মনে জমেছে রাগ। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে বিস্ফোরক মন্তব্য করল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নির্যাতিতার বাবা জানিয়ে দিলেন “আমরা আগামীকাল আদালতের রায়ের কপি হাতে পাব। তারপরে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অত ব্যস্ত হয়ে এগিয়ে এসে কিছু করতে হবে না। এতদিন উনি অনেক করেছেন আর যেন উনি কিছু না করেন। এটাই আমাদের অনুরোধ।”
ফের CBI এর তদন্ত নিয়ে অভিযোগ
এছাড়া নির্যাতিতার বাবা আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী অনেক কথা বলতে পারেন। উনিই তো সমস্ত তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছেন। ওনার পুলিশ কমিশনার, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার উপস্থিত থেকে সমস্ত অন্যায়গুলো এভাবে চাপা দিয়েছেন। পুলিশ এগুলো দেখতে পাচ্ছে না? আমাদের হাতে রায়ের কপি আসুক তারপরে দেখে সবকিছু সিদ্ধান্ত নেব।” পাশাপাশি CBI এর তদন্ত নিয়েও একাধিক মন্তব্য করেছেন তিনি। নির্যাতিতার বাবা এবং মায়ের দাবি সিবিআই ঠিক মতো তদন্ত করেনি বলেই সঞ্জয়ের ফাঁসি হয়নি। নির্যাতিতার বাবা বলেন, “বিচারকের উপর আমরা পূর্ণ আস্থা রেখেছিলাম, বিচারক সেই আস্থা রেখেছেন। সিবিআই দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ঠিকমতো তথ্য প্রমাণ দিতে পারেনি বলেই তার মৃত্যুদণ্ড হয়নি। তার বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।”
এদিকে রাজ্য সরকারকে আইনের সংস্থান অনুযায়ী আর্থিক ক্ষতিপূরণ বাবদ নিহতের পরিবারকে ১৭ লাখ টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছিল শিয়ালদা আদালত। কিন্তু সেই টাকা গ্রহণ করতে চায় না নির্যাতিতার পরিবার। তাঁর কথায় “আমার মেয়েকে বিকিয়ে দিতে আসিনি। আমরা এখানে বিচার চাইতে এসেছি।” এদিকে গত শনিবার আরজি কর মামলায় রায়দানের আগেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন নির্যাতিতার বাবা।
প্রসঙ্গত, শনিবার বেলায় বাড়ি থেকে শিয়ালদা আদালতের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের বাবা জানিয়েছিল, ‘এদের প্রশাসন ব্যবস্থার সমস্ত কর্তব্যের গাফিলতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে পর্যন্ত বলেছেন যে রাত দুটো পর্যন্ত জেগে এই বিষয়টাকে মনিটর করেছেন। ওঁর কী এত ইন্টারেস্ট ছিল, সেটাই আমরা জানতে চাই।’