প্রীতি পোদ্দার, মুম্বই: রাজ্যে আর্থিক তছরুপের একের পর এক ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ইডির (Enforcement Directorate) ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বড় বড় দাপুটে নেতারাও তাঁদের ভয়ে লুকিয়ে থাকেন। এবার সেই ব্যাপারে সাজা দিতে গিয়ে নিজেই বড় শাস্তির মুখে পড়ল ED। প্রায় ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করল বম্বে হাইকোর্ট।
ঘটনাটি কী?
জানা গিয়েছে কয়েক বছর আগে জমি সংক্রান্ত একটি বিবাদের জেরে মুম্বইয়ের এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী রাকেশ জৈনের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের করেছিল ED বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আসলে এক ব্যক্তি ব্যবসায়ী রাকেশ জৈনের থেকে সম্পত্তি কিনেছিলেন, সেখানে নাকি ঐ ব্যবসায়ী চুক্তিভঙ্গ ও প্রতারণা করেছেন। তাই এর অভিযোগ এনে মুম্বইয়ের ভিলে পার্লে পুলিশ স্টেশনে FIR দায়ের করেন। আর সেই FIR এর ভিত্তিতেই আর্থিক তছরুপের মামলা করে ইডি। ২০১৪ সালের আগষ্ট মাসে ওই ব্যবসায়ীকে সমন পাঠানো হয় এই মামলায়।
ED-র বিরুদ্ধে ওঠে মামলা
আর ED-র করা সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এবার পাল্টা মামলা করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ব্যবসায়ী রাকেশ জৈন। এবং এই মামলার দাবিস্বরূপ তিনি জানান, এটি আর্থিক তছরুপের মামলাই নয়। এটি একটি দেওয়ানি মামলা। ওই ভবনটিকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি শংসাপত্র পেতে দেরি হওয়ার কারণে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন ক্রেতা। কিন্তু ক্রেতা নাকি নিজেই ভবনের ভিতরে কিছু কাজ শুরু করেছিলেন। সেই কারণে ওই শংসাপত্র পেতে দেরি হচ্ছিল। এরপর গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার বম্বে হাইকোর্টে সেই মামলা ওঠে বিচারপতি মিলিন্দ যাদবের সিঙ্গল বেঞ্চে।
কড়া নির্দেশ বিচারপতির
সূত্রের খবর, এদিন বিচারপতি মিলিন্দ যাদব উভয় পক্ষের বক্তব্য ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেন এবং বিভিন্ন তথ্য যাচাই করে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED র উপরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি এদিন ব্যবসায়ীর বক্তব্য শুনে জানান, এটি একটি দেওয়ানি মামলা, ইডি এই ভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারে না। বিচারপতি মিলিন্দ যাদব জানান, “ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিনা কারণে মামলা করা হয়েছে। আর্থিক তছরুপের অভিযোগ দাঁড়ায় না। তাই সেক্ষেত্রে ED কে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে ওই ব্যবসায়ীকে। পাশাপাশি যে ব্যক্তি প্রথম অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তাকেও ১ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে।”
আরও পড়ুনঃ ভারতের লাভ রেখেই ১৮০০০ অবৈধ নাগরিককে ফেরত পাঠাবে আমেরিকা
এছাড়াও এদিন বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি জানান, “আমি দৃষ্টান্তমূলক জরিমানা ধার্য করতে বাধ্য হয়েছি। কারণ ইডির মতো তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে একটি কড়া বার্তা দেওয়া প্রয়োজন যে, আইনি পরিসরের মধ্যে থেকেই তাদের চলতে হবে। সাধারণ মানুষকে হয়রান করার জন্য তারা কখনই আইনকে নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না।”
KKR-কে নিয়ে বোমা ফাটালেন আইয়ার, পাল্টা দিলেন আকাশ চোপড়াও