পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ বিশ্বের যে কোনো দেশের অর্থনীতিতে সেই দেশে মজুত থাকা ধাতু বা খনিজ একটা বড় ভূমিকা পালন করে। এই যেমন কিছুদিন আগে জানা গিয়েছে ভারতে লিথিয়ামের বিপুল সম্ভারের খোঁজ মিলেছে কর্ণাটক, ঝাড়খণ্ডে। যেটা ভারতের অর্থনীতির জন্য একটা বড় সুখবর। তেমনই এবার বিশাল স্বর্ণভান্ডারের খোঁজ মিলল চীনে। কোথায় ও কত টন সোনার ভান্ডারের খোঁজ পাওয়া গেল? জানতে আজেকের প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
চীনের পাহাড়ে খোঁজ মিলল স্বর্ণভান্ডারের
বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ধাতুর মধ্যে অন্যতম সোনা। যে কোনো দেশের সম্পদের পরিমাণ বোঝানোর জন্য সেই দেশে মজুত থাকা সোনাকেই গণ্য করা হয়। তাই চীনের এই বিপুল স্বর্নভাণ্ডারের খোঁজ পাওয়া একপ্রকার জ্যাকপট হাতে লাগার মত। অত্যাধুনিক মেশিনের সাহায্যে বেশ কয়েক বছর ধরে রিসার্চ চালাচ্ছিলেন একদল বিজ্ঞানীরা। যার ফল স্বরূপ হুনান প্রদেশের পিংজিয়াং কাউন্টির ওয়াঙ্গু গোল্ড ফিল্ডে ৩০০ টন সোনার ভান্ডারের হদিশ পাওয়া গিয়েছে।
সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের সোনা খুঁজল অত্যাধুনিক টেকনোলজি
শুধমাত্র সোনার ভান্ডার পেলেই যে সেটা খুব ভালো খবর তা কিন্তু নয়। সোনা বিভিন্ন রকমভাবে ও বিভিন্ন মানের হয়ে থাকে। তবে সুখবর হল এই যে চীনে যে সোনার খোঁজ মিলেছে সেটা সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের সোনা। এই সোনার ভাবনার খোঁজার জন্য যে মেশিনের ব্যবহার করা হয়েছে তা একেবারে লেটেস্ট টেকনোলজি বা বলা যেতে পারে নেক্সট জেনারেশন টেকনোলজি। এআই থেকে শুরু করে রোবটের ব্যবহার করে পাহাড়ের ভেতরের চিত্র তোলা থেকে স্যাম্পেল কালেক্ট করে আনা, এরপর তৎক্ষণাৎ সেই নমুনা পরীক্ষা করা সবটাই কয়েক বছর ধরে করা হয়েছে। তবে গিয়ে এই বিশাল জাকপটের খোঁজ মিলেছে।
ওলটপালট হতে পারে বিশ্বের স্বর্ণ বাজার
যে কোনো দেশের জন্যই সোনা একটা বড় পরিবর্তন আনতে পারে। সেখানে ৩০০ টন সোনা বিশ্বের স্বর্ণ বাজার ওলটপালট করে দেওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরী করতে পারে। কারণ আর পাঁচটা ধাতুর মত বাজারে সোনার সাপ্লাই বেড়ে গেলে আগামীদিনে সোনার দাম কমতে পারে ফলে শুধুমাত্র চীনে নয় বরং বিশ্বের প্রতিটা দেশের অর্থনীতিই প্রভাবিত হবে।
আরও পড়ুনঃ ৫ থেকে ১০ হাজারে শুরু হওয়া ব্যবসা, একবার বিনিয়োগে মাসে ৫০ হাজার হবে আয়
প্রকৃতির উপর প্রভাব
সোনার খোঁজ মিলেছে মানেই স্থানীয় সরকার চাইবে সেই সোনা উত্তোলন করতে। কিন্তু এর একটা মারাত্মক প্রভাব পরে পরিবেশের উপর। মাটির নিচে থেকে সোনা উত্তোলনের পক্রিয়া পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকারক হতে পারে। এর ফলে একদিকে যেমন ক্ষতিকারক কেমিক্যাল নির্গত হবে তেমনি মাটিও দূষিত হবে। যার ফলস্বরূপ হুনান প্রদেশের বাস্তুতন্ত্র ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে চিন্তা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদরা। তবে এক্ষেত্রে সোনা উত্তোলনের জন্য গ্রিন মাইনিং টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হচ্ছে চীনের তরফ থেকে। অর্থাৎ পরিবেশের ক্ষতি না করে সোনা উত্তোলন করা হবে। যদিও সেটা আদতে কতটা কার্যকরী হবে সেটা ভবিষ্যতেই বোঝা যাবে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে পাকিস্তানেও বড়সড় স্বর্ণ ভান্ডারের খোঁজ মিলেছিল। নতুন বছরের শুরুতেই পাকিস্তানের পাঞ্জাবে ৩২.৬ টন সোনার খঁজে পাওয়া গেছে বলে জানায় জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ পাকিস্তান। ইতিমধ্যেই সেখানে সোনা উত্তোলনের কাজ কিভাবে শুরু করা হবে তার জন্য পরিকল্পনা শুরু করা হয়েছে। একইসাথে মোট ৩২ কিলোমিটার এলাকার প্রায় ১২৭টি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে যাতে অবৈধভাবে কেউ সোনা না নিতে পারে। এই সোনা দেশের ডুবতে থাকা অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।