প্রীতি পোদ্দার, ইম্ফল: গতকাল অর্থাৎ বুধবার মণিপুরে বিজেপি শাসিত এন বীরেন সিং-এর নেতৃত্বাধীন সরকারের উপর থেকে সম্পূর্ণ সমর্থন প্রত্যাহার করার ঘোষণা করেছিল নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জেডি(ইউ)। মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লাকে জেডি(ইউ) এর মণিপুর শাখার প্রধান ক্ষেত্রিমায়ুম বীরেন সিং সরকারের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহারের চিঠি পাঠিয়েছিলেন। এবং স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে, এবার থেকে বিরোধী জনপ্রতিনিধির ভূমিকা পালন করবেন। মুহূর্তের মধ্যে শোরগোল পরে গিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে।
ঘটনাটি কী?
২০২২ সালে মণিপুরের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়েছিল জেডি(ইউ)। আর নির্বাচনে ছয় আসনে জয় লাভ করে তারা। কিন্তু নির্বাচন জেতার কয়েক মাস পরেই জেডি(ইউ) র পাঁচ বিধায়ক কে জয়কিসান সিং, গুরুসঙ্গলুর সানাতে, আচাবউদ্দিন, থাঙ্গজাম অরুণকুমার এবং এল এম খাউতে বিজেপিতে যোগ দেন। শুধুমাত্র বাকি ছিলেন মহম্মদ আবদুল নাসির নীতীশের দলে থেকে যান। সরকারিভাবে এতদিন ওই বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থন করছিলেন। আর এবার পাঁচজন বিধায়কের এইরূপ দল ছেড়ে যাওয়ার অভিযোগকে সামনে রেখেই মণিপুরে বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেডি(ইউ), এমনই জানান কেশ বীরেন। তবে তা নয়, এবার সম্পূর্ণ ভোল বদলে গেল নীতিশের দলের।
কেন বীরেনকে বরখাস্ত করা হল?
বুধবার দলের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই তড়িঘড়ি আসরে নামেন জেডি(ইউ) নেতৃত্ব। এবং জানিয়ে দিলেন গোটা বিষয়টাই নাকি ভুয়ো। জেডি(ইউ)-র জাতীয় মুখপাত্র রাজীবরঞ্জন প্রসাদ এদিন ওই চিঠিকে ‘ভিত্তিহীন’ এবং ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, রাজ্য নেতৃত্ব জেডিইউ-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করেই রাজ্যপালকে চিঠি লিখে সমর্থন প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়। তাই চাপে পড়েই ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এর জন্য জেডিইউ রাজ্য সভাপতি কেশ বীরেনকে চিঠি লেখার জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।
যদিও জেডি(ইউ) সমর্থন প্রত্যাহার করলে মণিপুরের বিজেপি সরকারের উপর কোনও প্রভাব পড়ত না। কারণ ৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভায় বিজেপির নিজস্ব ৩৭ জন বিধায়ক রয়েছেন। সঙ্গে নাগা পিপল্স ফ্রন্টের পাঁচ বিধায়ক এবং তিন জন নির্দল বিধায়কের সমর্থনও রয়েছে। ফলে অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হলেও বীরেন সিংয়ের সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সক্ষম ছিলেন।