কৃষ্ণনগর থেকে রিক্সায় কুম্ভ যাত্রা ৭৮-র যুবকের! শুধু পুণ্য স্নান নয়, উদ্দেশ্য আরও মহান

Published on:

krishnanagar to kumbh

প্রীতি পোদ্দার, কৃষ্ণনগর: গোটা ভারতবাসীর মনে এখন একটাই ইচ্ছে আর সেটি হল প্রয়াগরাজের কুম্ভ মেলায় গিয়ে একবার অন্তত পূণ্য স্নান করা। ১৪৪ বছর বাদে হচ্ছে এই মহাকুম্ভ মেলা (Mahakumbh 2025)। স্বভাবতই তাই এই মেলা ঘিরে উৎসাহিত বিভিন্ন মহল। সনাতনী ধর্মের এ যেন এক বিরাট চমক। তার উপর মেলার আকর্ষণ অনেকটাই বাড়িয়েছেন বিভিন্ন ‘বাবা’। ‘পালোয়ান বাবা’ থেকে শুরু করে মুম্বইয়ের ‘আইআইটি বাবা’ কেউই বাদ যাচ্ছে না। বিদেশ থেকে হাজির হচ্ছে একাধিক পুণ্যার্থী। আর এই আবহে এবার আরও এক চমক দেখল কৃষ্ণনগরের এক পুণ্যার্থী।

WhatsApp Community Join Now

কলকাতা থেকে কুম্ভমেলার দূরত্ব সড়কপথে প্রায় ৮০০ কিমির কাছাকাছি । যদি কেউ রেল পথে যেতে চায় তাহলে তার সময় লাগে প্রায় ১৩ ঘণ্টাও কাছাকাছি। বলতে গেলে অনেকটা সময় কেটে যায়। কিন্তু এই সময় যেন ৭৮ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের কাছে তুচ্ছ। তাইতো এই বয়সে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ভ্যান রিক্সার প্যাডেলে চাপ দিয়ে রওনা দিলেন কুম্ভ মেলার উদ্দেশ্যে। শুনতে অবাক লাগছে? ভাবছেন এও আবার হয় নাকি? কিন্তু না, এটাই সত্যি। চলুন তাহলে আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক এই বৃদ্ধের তীর্থযাত্রার কাহিনী সম্পর্কে।

তীর্থ নয় অন্য কারণে যাচ্ছেন কুম্ভে!

জানা গিয়েছে ৭৮ বছর বয়সী এই বৃদ্ধের নাম দুলাল বিশ্বাস। পাড়ায় সকলে তাঁকে ‘বাঁকা দা’ হিসেবেই চেনে। কৃষ্ণনগরে হাই স্ট্রিটে একসময় দর্জির দোকান ছিল তাঁর। তবে ৭৮ বছর বয়সী দুলালবাবুর প্রয়াগরাজে যাওয়ার উদ্দেশ্য যে শুধুই তীর্থ আদতে কিন্তু তা নয়। আসলে তাঁর একটি ছোট সংগঠন আছে। সেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হল পরিবেশে জলের অপচয় রোধ করা এবং জলকে বাঁচানো। এই নিয়ে তিনি যুবক বয়সে সাইকেল নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বহু জায়গায় গিয়েছেন। এমনকি এর আগে প্রত্যেক রবিবার তিনি নাকি তাঁর সাইকেলপ্রেমী বন্ধুদের নিয়ে নানা জায়গায় সাইকেল নিয়ে ভ্রমণ করে বেড়াতেন।

সঙ্গে চলেছেন স্ত্রী!

দুলাল বিশ্বাস এর কথায় কুম্ভে তিনি আসলে যাচ্ছেন সেখানকার কোটি কোটি মানুষের মধ্যে নদী তথা পরিবেশ জল ইত্যাদি বাঁচানোর এবং সংরক্ষণ করার বার্তা সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে। এককথায় বলা যায় বছরভর তিনি যে সমস্ত অভিযান চালিয়ে গিয়েছেন তার মধ্যে এটি একটি প্রতিরূপ বলা যায়। আর এবারের যাত্রায় সঙ্গ দিচ্ছেন তাঁর স্ত্রী স্বর্ণলতা দেবী। দুলাল বাবু আরও জানিয়েছেন যে, এই ভ্যান রিক্সা প্রায় ১২ বছর আগে তবে বন্ধুরা তৈরি করে দিয়েছিল। ভ্যান রিক্সার ওপরটা লোহার পাত দিয়ে ঘিরে দিয়েছিলেন তাঁরা। তখন নাকি তিনি ঠিক করেছিলেন কামাখ্যার মন্দিরে যাবেন সাইকেল চালিয়ে। কিন্তু তা সম্পূর্ণ হয়নি।

তবে এবার তাঁর লক্ষ্য অনেক দূর। তাই এবার এতটা দূরের রাস্তা সস্ত্রীক সাইকেল চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে এই গাড়িটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাড়িটিও বেশ একাধিক সরঞ্জাম দিয়ে সাজানো হয়েছে। এখনও অবধি শেষ খবর সূত্রে জন্য গিয়েছে দুলাল বাবু ও তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণনগর থেকে রওনা হয়ে বাংলাও ছাড়িয়ে গিয়েছেন। সকলের আশা খুব শীঘ্রই দুলালবাবু সুস্থভাবে তাঁর লক্ষ্য সম্পূর্ণ করে ফিরে আসবেন।

সঙ্গে থাকুন ➥
X