মসজিদে মাইক বাজানো নিয়ে বড় পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের, কঠোর নির্দেশ রাজ্য সরকারকেও

Published on:

loudspeaker on masjid

প্রীতি পোদ্দার, মুম্বই: বর্তমানে প্রযুক্তির যত উন্নত হোক না কেন পরিবেশের উপর এই উন্নতির প্রভাব যেন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। একাধিক দূষণে জর্জরিত পরিবেশ। যার মধ্যে অন্যতম হল শব্দ দূষণ। নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রায়ই হাসপাতালের সামনের রাস্তায় দেদার বাজে হর্ন। মিটিং-মিছিল, মাইকের ব্যবহারও চলছেই। এমনকি, হাসপাতালের সামনে সজোরে বাজে সাউন্ড বক্সও। বাদ যায় না ধর্মীয়স্থল গুলি। এবার সেই নিয়ে হাইকোর্ট এক বড় রায় দিল। যা প্রযোজ্য হবে সকলের ক্ষেত্রে।

ঘটনাটি কী?

WhatsApp Community Join Now

সম্প্রতি মুম্বইয়ের কুরলার দুটি আবাসনের নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে বম্বে হাইকোর্টে লাউড স্পিকার চালানো নিয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেখানে ওই দুই আবাসিক কমিটির অভিযোগ ছিল যে, এলাকায় বেশ কিছু মসজিদে এবং মাদ্রাসায় দেদার লাউডস্পিকার বাজানো হচ্ছে। শতবার বারণ করা সত্ত্বেও কথা না শোনায় পুলিশকে এই বিষয়ে বলা হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। যেহেতু পুলিশকে বারবার জানিয়েও কোনো কাজের কাজ হয়নি তাই শেষে বাধ্য হয়ে বম্বে হাই কোর্টে মামলা করা হয়। বিচারপতি এএস গড়করি এবং এসসি চন্দকের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে সেই মামলা।

অভিযোগ আসলেই ব্যবস্থা নিতে হবে পুলিশকে!

এই মামলা প্রসঙ্গে বম্বে হাই কোর্টের দুই বিচারপতি এএস গড়করি এবং এসসি চন্দক জানিয়েছেন যে, লাউডস্পিকার বা মাইক কোনও ধর্মের জন্য অপরিহার্য নয়। এছাড়া তারা আরও উল্লেখ করেছেন যে, এটি কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশও নয়, বরং শব্দদূষণ রোধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তাই শব্দদূষণ নিয়ে যদি কোনো অভিযোগ আসে তাহলে শীঘ্রই পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এবং এই প্রসঙ্গে বম্বে হাই কোর্ট মহারাষ্ট্র সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, ‘‘স্বয়ংক্রিয় ডেসিবেল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা” শীঘ্রই চালু করার জন্য।

এই মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ

তবে এই পর্যবেক্ষণটি শুধুমাত্র মসজিদ বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নয়, বরং সব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এতে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ধর্মীয় কার্যকলাপের মধ্যে নাগরিকদের স্বস্তি এবং শান্তির অবিচ্ছেদ্য গুরুত্ব রয়েছে। আদালতের মতে, শব্দদূষণ কখনোই সহ্য করা উচিত নয়, বিশেষত যখন তা মানুষের প্রাত্যহিক জীবনকে ব্যাহত করে। আর এই ধরনের অভিযোগগুলি যেন কোনও ধর্মের বিরুদ্ধে ঘৃণা বা বৈষম্য সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করা হয়, সেজন্য পুলিশের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

পাশাপাশি যেকোনো ধরনের শব্দদূষণই মানবিক অধিকার ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সমাজকর্মী কিংবা সাধারণ নাগরিক হিসেবে এই সিদ্ধান্তের গুরুত্ব উপলব্ধি করা অত্যন্ত জরুরি বলেও স্পষ্ট জানিয়েছে আদালত। এর আগে ২০২২ সালে এলাহাবাদ হাই কোর্টও লাউডস্পিকার নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছিল। যেখানে এলাহাবাদ হাই কোর্ট স্পষ্ট জানায় যে, মসজিদে লাউডস্পিকার টাঙানোর দাবি কোনো দিক থেকেই মৌলিক অধিকার নয়।

সঙ্গে থাকুন ➥
X