প্রীতি পোদ্দার, নদীয়া: এমনিতেই বাংলাদেশে অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে ভারত সীমান্তে। ওপার বাংলায় একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকায় দেশে একাধিক অনুপ্রবেশকারীরা সংখ্যা বেড়েছে। যদিও এদের মধ্যে অনেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তার উপর রাজ্যের সীমানা এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে গত মাস খানেক ধরে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা BGB -র সঙ্গে BSF এর দ্বন্দ্ব এক নতুন আকার নিয়েছে। আর এই আবহে এবার আরও এক বড় আশ্চর্য জিনিস উদ্ধার করল BSF। সীমান্ত সংলগ্ন মাটি খুঁড়ে একটি বাঙ্কারের হদিস পেল BSF।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর গত বুধবার মাটির ভিতর কয়েকটি বাঙ্কারের হদিস পায় বিএসএফ (Border Security Force)। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়ায় অভিযান চালায় BSF-র দল। সঙ্গে সঙ্গে মাজদিয়া সুধীররঞ্জন লাহিড়ী কলেজের কাছেই একটি বাগানে মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করে দেয় এই বাহিনীর কয়েকজন। আর কিছুটা খুড়ঁতেই মাটির তলা থেকে বেরিয়ে আসে বাঙ্কার। চাষের ক্ষেতের পাশে একটি ঘর বানিয়েছিল স্থানীয় কয়েকজন। ওই ঘর থেকে চাষের কাজ দেখভাল করা হয় দাবি ছিল তাদের। সেই ঘরেরই পাশে মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় ছিল বাঙ্কারের মুখটি যা দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে প্রায় ৩ ফুট। কিন্তু বাঙ্কার খুলতেই সকলের চোখ কপালে উঠল। দেখা গেল এই বাঙ্কারের ভেতর একাধিক পেটিতে সাজানো রয়েছে কতগুলি নিষিদ্ধ কাফ সিরাপের বোতল।
বাঙ্কার খুলতেই চোখ কপালে BSF-র
BSF এর প্রাথমিক ধারণা বাঙ্কারের ভিতর থেকে পাওয়া এই নিষিদ্ধ ওষুধগুলো আসলে বাংলাদেশে পাচার করার জন্যেই রাখা হয়েছে। তবে কে বা কারা ওই বাঙ্কার বানিয়েছিল, সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে তদন্ত চলছে। শুধুই কি ওষুধ পাচার হত নাকি বাঙ্কার ব্যবহার করে ভারতে নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশি জঙ্গিদের, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। জায়গাটিকে ঘিরে রাখার ব্যবস্থা করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সঙ্গে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করা চলছে।
তবে স্থানীয়রা ওই বাঙ্কার প্রসঙ্গে দাবি করছে যে, এই ঘটনা কোনো দিক থেকেই আমাদের অবাক করছে না। কারণ বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে মাজদিয়াসহ কৃষ্ণগঞ্জ থানা এলাকার বিস্তীর্ণ সীমান্ত পাচারকারীদের কাছে স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। এমনকি এখানকার পুলিশও তাঁদের সঙ্গে যুক্ত। এইভাবেই কারবার চালায় পাচারকারীরা। কৃষ্ণগঞ্জের বড় বড় মাথার বিনিয়োগ রয়েছে এই কারবারে।
আরও পড়ুনঃ পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক স্বাস্থ্য উদ্বেগজনক! ভয়ঙ্কর রিপোর্ট প্রকাশ নীতি আয়োগের
আপাতত ওই এলাকায় আরও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে ২৬ জানুয়ারি অর্থাৎ প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে এই ধরনের আরও একাধিক বাঙ্কার উদ্ধার হলেও হতে পারে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি থেকে। এবং এই বাঙ্কার গুলি উদ্ধার হওয়ার পর ওই এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে এবং গোয়েন্দা কুকুর এনে আরও তল্লাশি অভিযান জোরদার করা হচ্ছে।