প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরেই মহারাষ্ট্রে গুলেন বেরি সিনড্রোমে (Guillain–Barré syndrome) আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। HMPV র পরেই শিশুদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে গুলেন বেরি সিনড্রোম। পাশাপাশি পুণেতে আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১০০ ছাড়িয়েছে। আর এবার সেই রোগের ছায়া দেখা দিল খাস কলকাতায়।
কলকাতায় ঢুকে গেল এই ভয়াবহ রোগ
সূত্রের খবর, কলকাতায় দুই শিশুর শরীরে দেখা গেল গুলেন বেরি সিনড্রোম। এদের মধ্যে একজনের বয়স আট বছর এবং অপরজনের বয়স নয় বছর। প্রথমজন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাসিন্দা। তাকে ২৫ দিন আগে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। অন্যজন উত্তর ২৪ পরগনার বাগুইহাটির বাসিন্দা। সে ১২ দিন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বর্তমানে দুজনেই রয়েছেন চিকিৎসক প্রভাস প্রসূন গিরির অধীনে। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে দুজনেই এখন ভেন্টিলেশনে রয়েছে।
গুলেন বেরি সিনড্রোম কী? What Is Guillain-Barre Syndrome
চিকিৎসকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, গুলেন বেরি সিনড্রোম রোগটি আদতে একটি অটোইমিউন ডিসঅর্ডার। অর্থাৎ শরীরের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন শরীরের বিরুদ্ধে কাজ করে তখন শরীরের উপর এই রোগের আক্রমণ ঘটে। জানা গিয়েছে এই রোগটি ইমিউনিটি স্নায়ুর উপর আক্রমণ করে। এর ফলে স্নায়ুগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে পায়ের সমস্যা থেকে শুরু করে খেতে এবং চিবোতে সমস্যা হয়। অবস্থা এতটাই শোচনীয় হয়ে যায় তখন যে ভেন্টিলেশনে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।
এই রোগের উপসর্গ কী? Guillain-Barre Syndrome Symptoms
শিশুদের শরীরে গুলেন বেরি সিনড্রোম রোগটি দেখা দিলে প্রথমে হাতে-পায়ে দুর্বলতা দেখা যেতে পারে। আর তারপর শরীরে অসম্ভব কাঁপুনি দেখা যাবে। আর এর ফলে স্নায়বিক দুর্বলতা আস্তে আস্তে হাত-মুখ সহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে যায়। যার ফলে হাঁটতে অসুবিধা হতে পারে। এমনকি এর ফলে ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়িয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাও হতে পারে। কিন্তু সবার উপসর্গ সমান নয়। তাই চিকিৎসকদের মতে, এই উপসর্গগুলি দেখলেই অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার। নইলে এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ গাড়ির ইন্সুরেন্স থাকলে আর মিলবে না পেট্রোল, ডিজেল বা CNG! আসছে নয়া নিয়ম
কীভাবে হচ্ছে এই রোগ?
সংক্রমণের কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন যে গুলেন বেরি সিনড্রোম এর অন্যতম উপাদান হল খাবার বা জল। অল্প সিদ্ধ বা কাঁচা খাবার, অপরিশুদ্ধ জল থেকে ক্যাম্পিলোব্যাকটার জেজুনি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে শরীরে। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, গত বছর মাম্পসের প্রকোপ হয়েছিল। ঠিক তার পরেই এই সিনড্রোমে আক্রান্ত হয় অনেক শিশু।সম্ভবত, সেই কারণেই ফের এই বছর রোগটি হচ্ছে বলে অনুমান।