প্রীতি পোদ্দার, সিউড়ি: রাজনৈতিক দলগুলোতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কোনো নতুন বিষয় নয়। খবরের পাতায় প্রায়শই দেখা যায় একই দলের নেতা নিজেদের দলেরই কোনো কর্মীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। আবার কখনও দেখা যায় একই দলের কর্মী হিংসার বশে তাঁরই দলের কর্মীকে খুন করছে। তবে সম্প্রতি সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যেন এক অন্য রূপ নিল। শাসকদলের নেতাকে উদ্ধার করতে গিয়ে রীতিমত স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়ে পুলিশ। শুধু তাই নয়, IC-র কলার ধরেও টানাটানি করে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সিউড়ি।
ঘটনাটি কী?
সিউড়ির মিনি স্টিল এলাকায় তৃণমূলের দুই দাপুটে নেতা এবং কর্মী বাবু আনসারির সঙ্গে ইকবাল আনসারির দীর্ঘদিন ধরে জমি বিবাদ চলছিল। কিন্তু বাবু আনসারির দলবলের দাবি ইকবাল আনসারি একজন বিজেপি সমর্থক। সবসময় তিনি নাকি দলবিরোধী কাজ করে। সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ করেই সশস্ত্র অবস্থায় গ্রামে ঢুকে স্থানীয়দের হুমকি দিতে থাকে বাবু ও তাঁর দলের এক কর্মী। এর পর একজোট হয়ে গ্রামবাসীরা তাদের ধরে ফেলে। সঙ্গে এই দুজনকে ধরে চলে গণধোলাই।
ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু হয় এলাকায়
সংঘর্ষের খবর পেয়ে পৌঁছয় সিউড়ি থানায়। সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বাহিনী এসে পরে। তারা বাবুসহ ২ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে গেলে বাধা দেন স্থানীয়রা। এর ফলে দুপক্ষের সংঘর্ষ আর ভয়ংকর আকার ধারণ করে। বাবু আনসারিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন গ্রামবাসীরা। তখনই এক যুবক সিউড়ি থানার আইসির কলার ধরে টানতে থাকেন। বাকিরা বাবু আনসার হাত পা ধরে টানাটানি শুরু করে। কার্যত ওসি সহ বাবু আনসারিকে টেনে নিয়ে যান গ্রামবাসীরা। এর পর ওসিকে মুক্ত করতে ময়দানে নামে পুলিশ ও ব়্যাফ। ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু হয় গোটা এলাকায়। বেশ কিছুক্ষণ ধরে সংঘর্ষ চলার পর অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে এই গোটা ঘটনায় রাজনীতির রং লাগাতে নারাজ বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। তিনি বলেন এই ঘটনা আসলে ২ জন ব্যক্তির মধ্যে জমিবিবাদ। এর মধ্যে কোনো তৃণমূল – বিজেপি নেই। তাই ঘটনায় রাজনীতির রং লাগাতে চাই না। পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পদক্ষেপ করেছে। এসব ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। কিন্তু অন্য দাবি করল গ্রামবাসীরা। তাঁদের মতে তৃণমূল নেতাদের মদতেই বাবু আনসারির এলাকায় বেশ দাপট বেড়েছে। এর আগেও গ্রামে এমন অশান্তি হয়েছিল। শুধু নেতারাই নয়, পুলিশেরাও বাবুকে সবসময় মাথায় করে রাখে।