প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বরাবর যেকোনো মামলায় মামলাকারীর আইনজীবীরা ভর্ৎসনা মুখে পড়ে তো আবার কখনও দেখা যায় অভিযুক্তের আইনজীবী ভর্ৎসনার মুখে পড়ে। বাদ যায় না আসামিরাও। কিন্তু এবার স্বয়ং কলকাতা হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে। আসলে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের জন্যে একটি ডিভিশন বেঞ্চ বসে এবং জামিনের জন্যে অপর একটি ডিভিশন বেঞ্চ বসে। এবার সেই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল কলকাতা হাইকোর্টকে। রিপোর্ট তলব করার নির্দেশ দেওয়া হল সুপ্রিম কোর্টে।
ঘটনাটি কী?
সম্প্রতি এক অভিযুক্ত খুনের মামলায় জামিন চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু সেই মামলা হাইকোর্টে সীমাবদ্ধ থাকেনি। এর জল গড়িয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। আর এবার এই মামলা নিয়ে হাইকোর্টের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা হয় শীর্ষ আদালতে। এই নিয়ে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি অভয় এস অকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চ ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করে জানায় কলকাতা হাই কোর্টে অনেক জামিনের মামলা দায়ের হচ্ছে এবং সেগুলি বিচারাধীন থেকে যাচ্ছে দিনের পর দিন। কোনো মামলার শুনানি ঠিকভাবে হচ্ছে না। এমনকি এই বিষয়ে বিচারপতির মন্তব্য করে জানান যে ডিভিশন বেঞ্চ এই সব জামিনের মামলার শুনানি করছে দেখে তাঁরা অবাক হয়ে যাচ্ছেন।
রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ
আসলে দেখা যায় যে ডিভিশন বেঞ্চে যে সকল জামিনের মামলার শুনানি হয় তা সময়সাপেক্ষ হয়ে থাকে। তাই সেক্ষেত্রে যদি সিঙ্গল বেঞ্চ এই সব মামলা শোনে তাহলে শুনানি দ্রুত সম্পন্ন হবে। কিন্তু কেন ডিভিশন বেঞ্চ এই কাজ করছে, এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সুপ্রিম বিচারপতি। এছাড়াও শীর্ষ আদালতের কথায়, দেশের অন্যান্য হাই কোর্টে জামিন এবং আগাম জামিনের মামলা সাধারণত সিঙ্গল বেঞ্চে শোনা হয়। তবে কলকাতা হাই কোর্টে কেন এই ধরনের মামলা ডিভিশন বেঞ্চে শোনা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। তাই আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কলকাতা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারকে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
আরও পড়ুনঃ EPF-এ ব্যাঙ্কের বিবরণ ঠিক আছে? সহজ পদ্ধতিতে করুন আপডেট
জানা গিয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেওয়া সেই রিপোর্টের মাধ্যমে শীর্ষ আদালতকে জানাতে হবে, ২০২৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত কলকাতা হাই কোর্টে কতগুলি জামিন এবং আগাম জামিনের মামলা দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি এও জানাতে হবে যে ওই সময়ের কতগুলি মামলা আদালতে এখনও বিচারাধীন রয়েছে। আর ওই একই দিনে অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে খুন সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।