শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ ধুঁকতে থাকা কারখানা, ঘিঞ্জি একটা শহর। এখনকার হাওড়া (Howrah) দেখলে আরো মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, এই শহরে এমন কী-বা রয়েছে? আছে। হাওড়া শহরকে জানতে, বুঝতে হলে এর ইতিহাস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে হবে। হাওড়া কেন বিখ্যাত? এই প্রশ্নের উত্তর সন্ধানে আজ চেষ্টা চালাবো আমরা।
হাওড়া কেন বিখ্যাত?
ব্রিটিশ ভারতের প্রাণের শহর ছিল কলকাতা। কলকাতাকে ঢেলে সাজিয়েছিল ব্রিটিশরা। কলকাতার পাশেই রয়েছে হাওড়া। সেখানেও তার ছাপ পড়েছে। হাওড়া বলতেই প্রথমে মনে পড়বে হাওড়া ব্রিজ, হাওড়া রেল স্টেশন। বড়জোর হয়তো বলবেন বেলুড় মঠ। এছাড়া, এছাড়া কি আর কী কিছু রয়েছে? রয়েছে। রয়েছে হাওড়া শহরের ইতিহাস।
হাওড়াকে কেন্দ্র করে এক সময় চলেছিল শিল্প যজ্ঞ। যার ফলে তৈরি হয়েছিল বহু কল কারখানা। তার আগের কথা, এখনকার যে হাওড়া শহর, সেখানে ছিল অন্যতম প্রধান বন্দর। কি শুনে অবাক হচ্ছেন? হাওড়া জেলার বেতর এলাকায় ছিল অন্যতম গুরুতবপূর্ণ বন্দর। আর বন্দর মানেই ব্যবসা বাণিজ্য।
হাওড়া নামের উৎপত্তি হল কীভাবে?
অনেকে মনে করেন যে হাওড়া নামের উৎপত্তি হয়েছে হাওর শব্দ থেকে। হাওর মানে হল জলাভূমি। হাওড়ায় নাকি এক সময় ছিল অনেক জলাভূমি বা হাওর, সেখান থেকে হয়েছে হাওড়া। যদিও ভিন্ন মত থাকতে পারে। হাওড়ার সঙ্গে এখনকার শালকিয়া বা পূর্বতন শালিকার নামও ইতিহাসে পাওয়া যায়। কলকাতার পাশাপাশি ইংরেজদের জন্য হাওড়া শহরের গুরুতবপূর্ণ ছিল অনেকটা। এখন যে বেতর, সেখানে আগে ছিল বন্দর। এ কথা আগেই বলা হয়েছে। এই বন্দরে নোঙর ফেলত বড় বড় জাহাজ। জানা যায়, ইংরেজদের আগে হাওড়া ছিল ভূরিশ্রেষ্ঠ রাজ্যের অংশ।
রয়েছে এক দারুণ ইতিহাস
কলকাতা সহ গোটা বাংলা বলা ভাল ভারত ব্রিটিশদের দখলে থাকলেও, হাওড়ায় তাঁরা দাঁত বসাতে পারেনি। ৪৭ বছরের প্রচেষ্টার পর পলাশির যুদ্ধ শেষে হাওড়া ইংরেজদের শাসনের অধীনে চলে আসে। তার পর এখানে, বিশেষত নদী নিকটবর্তী এলাকায় শুরু হয় আধুনিকরণের কাজ। তৈরি হয় সেতু, রেল স্টেশন। এখন আমরা যে হাওড়া ব্রিজ দেখছি, আগে সেটা ছিল একটা ভাসমান সেতু। গঙ্গার ওপর ভাসমান সেতু বা পন্টুন ব্রিজ। পরেই সেটাই হয় এখনকার হাওড়া ব্রিজ হিসেবে। খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, এই হাওড়া ব্রিজ তৈরি করার জন্য গঙ্গা নদীর ওপর বসানো নেই কোনো পিলার। এটাকে বলে ক্যান্টিলিভার ব্রিজ। মানব সভ্যতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইজিনিয়ারিংয়ের নিদর্শন। হাওড়ার আরো অনেক ইতিহাস রয়েছে। জানতে হলে পড়তে হবে।